মঙ্গলবার (১৯ জুন) দুপুরে মাগুরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের তদন্তে এ অনিয়মের সত্যতা ওঠে এসেছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ম্যাজিস্ট্রেট কাউছার হাবিব ও ফারুক আহম্মেদ বাংলানিউজকে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মঙ্গলবার (১৯ জুন) দুপুরে সদর হাসপাতালে রোগীদের সরবরাহকৃত খাদ্যের মান এবং খাদ্যতালিকা সরেজমিন যাচাই করতে যান।
রোগীদের জন্য প্রতিদিন দুধ ও চিনি বরাদ্দ থাকলেও তা সরবরাহ করা হয় না। যে মাছ, মাংস দেওয়া হয় তা বরাদ্দের তুলনায় অতি সামান্য বলে রোগীদের অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালের বাবুর্চি সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন বরাদ্দকৃত চাল থেকে এক কেজি চাল, মাংস থেকে ১০০ গ্রাম এবং সবজি থেকে এক কেজি করে কম সরবরাহ করা হয়।
কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটরা সরেজমিন গিয়ে দেখেন, খাসির মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও দুপুর দেড়টা পর্যন্ত হাসপাতালের রান্না ঘরে কোনো মাংস আসেনি। মঙ্গলবার ৮৮ জন রোগীর জন্য তিন কেজি পেঁপে ও ৫০০ গ্রাম আলু সরবরাহ করা হয়েছে।
বাবুর্চি রেহেনা বেগম বলেন, খাসির মাংস সরবরাহ করার কথা থাকলেও ঠিকাদার কখনই তা দেন না। মাংসের পরিবর্তে পিলাই, ফ্যাকশা ও চামড়া সরবরাহ করা হয়। রুই মাছ দেওয়ার কথা থাকলেও সরবরাহ করা হয় পোনা মাছ। দুধ, চিনি কখনই সরবরাহ করা হয় না।
হাসপাতালে খাদ্য তালিকা অনুযায়ী প্রতিদিন পেইং বেডের রোগীরা দুধ, চিনি, কলা, ডিম ও সাধারণ বেডের রোগীরা পাউরুটি, ডিম, কলা, ভাত, ডাল, বিভিন্ন সবজি পাওয়ার কথা।
এছাড়া শনি, সোম ও বুধবার রোগী প্রতি দুপুর ও রাতে ১১০ গ্রাম রুই মাছ, বৃহস্পতি, মঙ্গল ও রোববার দুপুর ও রাতে ৫৫ গ্রাম খাসির মাংস এবং শুক্রবার দুই বেলা ১১২ গ্রাম করে মুরগির মাংস বরাদ্দ রয়েছে।
শেখ ইসতিয়াক নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, খাতা কলমে রোগীদের জন্য সবকিছু বরাদ্দ থাকলেও তার চার ভাগের এক ভাগও সরবরাহ করা হয় না। সবই চুরি হয়ে যায়, দেখার কেউ নেই।
হাসপাতালে খাদ্য সরবরাহে নিয়োজিত ঠিকাদার ফারুক আহম্মেদ জানান, তার লাইসেন্সে কাজ নেওয়া হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীরা সাব ঠিকাদার হিসেবে খাবার সরবরাহ করেন। অনিয়ম হলেও তার কিছু বলার নেই।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুশান্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, খাবার নিয়ে তার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। বিয়ষটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৮
এমএইচ/আরবি/