ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বেদখলে ২ লাখ ৬৮ হাজার একর বনভূমি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৮
বেদখলে ২ লাখ ৬৮ হাজার একর বনভূমি সংসদ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ছবি: সংগূহীত

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: দেশে মোট বনভূমির পরিমাণ প্রায় ২৬ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে এ পর্যন্ত দুই লাখ ৬৮ হাজার একর সরকারি বনভূমি বেদখলে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

মঙ্গলবার (১৯ জুন) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা।

কিন্তু আমাদের ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বনভূমি রয়েছে। এর মধ্যে বহুদিন আগে থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারি বনাঞ্চলের নিকটবর্তী জনসাধারণের চাষাবাদ, বসতি স্থাপণ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি কারণে জবরদখল হয়ে আছে। এছাড়া কোনো কোনো স্থান পাকা ইমারত, শিল্পায়ন, পাকা সড়ক নির্মাণ, হাট-বাজার স্থাপন ইত্যাদি কারণে বেদখল হয়ে আছে। তবে বর্তমানে ব্যাপক প্রচার এবং সরকারের তৎপরতার ফলে নতুন করে বনভূমি জবরদখলের কোনো সুযোগ নেই।
 
দখল করা জমি মুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। সেই কাজ এখন চলমান বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুন>>

*** ঢাকায় নির্মাণ হবে ঘৃণাস্তম্ভ 

 সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সানজিদা খানমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, আগামী পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের বনভূমি ২৪ শতাংশে উন্নীত করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন জেগে ওঠা চর বনায়ন, দেশের সমগ্র উপকূলজুড়ে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী নির্মাণ, সড়ক ও বাঁধের পাশে এবং রেল লাইনের কাছে বনায়ন সৃজন করা, সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর আঙিনায় বনায়ন এবং সর্বস্তরের জনগণকে নিজস্ব পতিত জমিতে বনায়নের জন্য উৎসাহিত করার কাজ চলমান।
 
সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বন অধিদফতরের অধীনে মোট ২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বর্তমানে ১৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এজন্য ১৮ হাজার ৬৭৮ হেক্টর ব্লক বাগান, দুই হাজার ৭১৭ কিলোমিটার স্ট্রিপ বাগান ও বিক্রয় এবং বিতরণসহ অন্যান্য চারা রোপন করা হয়েছে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজারটি।
 
মন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রান্ট ফান্ডে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট রাজস্ব বাজেট হতে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মে পর্যন্ত দুই হাজার ৮৮৯ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার কোটি প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫৬২টি প্রকল্প গ্রহণ করেছে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টিবোর্ড। এর মধ্যে ২৫৯টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নের প্রকল্প গ্রহণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে। তবে বর্তমানে এ ফান্ডে বরাদ্দযোগ্য অর্থের স্থিতি নেই।
 
জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল পরিচালনার জন্য আইনি বিধান অনুযায়ী ১৭ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্রাস্টিবোর্ড গঠন করা হয়েছে এবং ট্রাস্টি বোর্ডকে সহায়তার জন্য ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি সহায়তা কমিটি তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করেন বনমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঝুঁকি নিরূপণের জন্য ‘অ্যাসেসমেন্ট অব সি লেবেল রাইজ অ্যান্ড ভার্নাবিলিটি ইন দি কোস্টাল জোন অব বাংলাদেশ থ্রু টেন্ড এনালাইসিস’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প নিয়েছে সরকার, যা চলমান। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেকগুলো প্রকল্প ও সহায়তাও কার্যকরিভাবে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৮
এসএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।