ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, বন্যার আশঙ্কা

নীলফামারী: উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। নীলফামারীর ডালিয়ার তিস্তা ব্যারাজ বাইশপুকুর পয়েন্টে বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ সেন্টিমিটার। নতুনভাবে এই পয়েন্টে বিপদসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬০ মিটার। 

রোববার (১৭ জুন) তিস্তা নদীর প্রবাহ বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধির কারণে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যার আশঙ্কা করছেন তিস্তা অববাহিকার মানুষজন।

 

এদিকে পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়া তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা ও লালমনিরহাট জেলার চর বেষ্টিত গ্রামে নদীর পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।  

তিস্তা অববাহিকার জনপ্রতিনিধিরা জানান, তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি মানেই উজানে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের জলকপাট খুলে দেয়া।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা নিয়ন্ত্রণ পুর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, রোববার সকাল ৬টায় ডালিয়ার তিস্তা ব্যারাজ বাইশপুকুর পয়েন্টে তিস্তার পানি ৫২ দশমিক ২০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা সকাল ৯টায় আরো ৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়।  

ডালিয়া পয়েন্টে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ মিলিমিটার। অপরদিকে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকায় তিস্তা পরিবেষ্টিত টেপাখাড়িবাড়ি, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, পূর্ব ছাতনাই, নাউতারা, জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি, গোলমুণ্ডা, শৌলমারীসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের বসবাসরত পরিবারগুলো আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।  

এলাকাবাসী জানায়, চরগ্রামের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও পলিতে ভরে থাকা তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেই পানি উপচে এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাঁধে বা উচু স্থানে আশ্রয় নিতে হয়। তারা আরও জানায়, বর্ষাকাল শুরু হলে উজানের ঢলে তিস্তা ভাসিয়ে দেয় সব কিছু।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম জানান, বর্ষাকালে নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে বন্যা দেখা দিবে। আমরা সর্তকাবস্থায় রয়েছি।  

তিনি আরও জানান, এবার নতুন করে তিস্তা নদীর বিপদসীমার পরিমাপ (গেজ রিডার) বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই দফায় বিপদসীমার পরিমাপ বৃদ্ধি করা হলো ৩৫ সেন্টিমিটার।  
আগের পরিমাপের চেয়ে এবার ২০ সেন্টিমিটার বেশি বৃদ্ধি করা হয়। এর আগে পরিমাপটির প্রথম দফায় ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি করা হয়েছিল।

সূত্র মতে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ভারতের গজলডোবার জলকপাট উন্মুক্ত করে দেয়াসহ ভারী বর্ষণের উজানের ঢলে ৯৮ বছরের মধ্যে পলিতে ভরাট তিস্তা অববাহিকায় ভয়াবহ বন্যার সৃস্টি হয়। সে সময় নদীর পানি বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৪০ মিটারের অতিক্রম করে ৫৩ দশমিক ০৫ মিটার অর্থ্যাৎ ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।

তাই তিস্তা নদীর বিপদসীমা পরিমাপ সংখ্যাটি দ্বিতীয় দফায় পরিবর্তন করে তা বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করা হয়। ওই প্রস্তাবে এবার পরিমাপের সংখ্যা করা হয়েছে ৫২.৬০ মিটার। যা গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকারিতা করা হয় বলে জানান ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮ 
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।