ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরিবহন সংকটের সুযোগে বেশি ভাড়া আদায়

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
পরিবহন সংকটের সুযোগে বেশি ভাড়া আদায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে চলছে গণপরিবহন সংকট। প্রতিদিনের মতো যে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীর জন্য বাস দাঁড়িয়ে থাকতো, এখন সেখানে যাত্রী দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু বাস নেই। বাসের জন্য যাত্রীদের অন্তত ১০ মিনিট সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কোথায় এর চেয়ে বেশি আর কোথাও এর চেয়ে কম। পাশাপাশি ঈদ সালামির কথা বলে ১০ টাকা করে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হচ্ছে ঘরেফেরা যাত্রীদের।

রোববার (১৭ জুন) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, মৎসভবন, প্রেসক্লাব,পল্টন, গুলিস্তান, মতিঝিল, আরামবাগ এবং কমলাপুর এলাকা ঘুরে এই দৃশ্য দেখা গেছে। ফলে এসব এলাকার যাত্রীরা গণপরিবহনের পরিবর্তে রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে নিজের গন্তব্যে  যাচ্ছেন।

রাজধানীতে পরিবহন সংকট।  ছবি: বাংলানিউজবাসচালক ও হেলপাররা বলছেন, ঈদের বেশির ভাগ বাস রিজার্ভে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গেছে।  পরিবার-পরিজনের সঙ্গে অনেকে ঈদ উদযাপনের কারণে কিছু গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রাজধানীতে গাড়ি কম।

সকালে সাড়ে ৯টায় কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্য নাতনিসহ জেসমিন আক্তার কমলাপুর রেলস্টেশনে এসেছেন। কিন্তু বিকেলের আগে ট্রেন নেই জেনে সায়েদাবাদ যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছেন। ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে ১০টা ৯মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করে কোনো বলাকা বাসের দেখা না পেয়ে হাঁটতে হাঁটতে আরামবাগ চলে এসেছেন তিনি। এখানেও অন্তত ১০ মিনিট অপেক্ষা করেন। বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা।  ছবি: বাংলানিউজএরপর ট্রাফিক পুলিশের সহায়তায় সিলেটগামী একটি দূরপাল্লার বাসে করে সায়েদাবাদ যান। তারও ৫ মিনিট পর বলাকা পরিবহনের একটি বাস সায়েদাবাদের উদ্দেশ্যে আরামবাগ পার হয়। অথচ এই রাস্তা দিয়ে দু-এক মিনিট পর পর বলাকা বাস যায়।

শুধু বলাকাই নয়, আরামবাগ থেকে ছেড়ে যাওয়া মোহাম্মদপুরগামী এমটিসিএল, কেটিসিএল পরিবহন। গাবতলীগামী ওয়েলকাম, আট নম্বর, মিরপুরগামী, বিকল্প, ল্যাম্পস এবং মহাখালীগামী শতাব্দী পরিবহনগুলোও ১০ থেকে ১৫ মিনিট দেরিতে ছাড়ছে। ফলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকেও বাস পাচ্ছে না যাত্রীরা। তাই অল্প দূরত্বের পথ থাকলে যাত্রীরা রিকশায় গন্তব্যে যাচ্ছেন। আর একটু বেশি দূরত্ব হলে সিএনজি ভাড়া করে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে শাহবাগ থেকে উত্তরাগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিএসএমএমইউ হাসপাতালে আসছিলাম আমার এক আত্মীয়কে দেখতে। ২০ মিনিট ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি কোনো বাস পাইনি। তাই এখন সিএনজিতে করে যাচ্ছি।

ফার্মগেট থেকে মগবাজার যেতে পাক্কা ১৮ মিনিট অপেক্ষা করে কোনো বাস না পেয়ে ছেলেকে নিয়ে রিকশা করে ৪০ টাকা ভাড়া দিয়ে মগবাজার আসলেন ইমতিয়াজ করিম।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহন সংকটের কারণে একদিকে ভাড়া দিতে হচ্ছে বেশি, অন্যদিকে সময়ও যাচ্ছে বেশি।

গাজীপুর শহরতলী পরিবহনের চালক শাহরিয়ার অনিক বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দিন থেকে ঢাকা-গাজীপুর লাইনে মাত্র ৩০টি বাস চলছে। আর বাকিগুলো ‘খেপ’ দিতে গেছে। এই পরিবহনের বাসগুলো গাজীপুর শিববাড়ী থেকে মতিঝিল আসা-যাওয়া করে।

একই কথা বলেন বলাকা পরিবহনের কন্ট্রাক্টর লিটন মিয়া।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে ৫০-৬০টি বলাকা এই লাইনে চলছে। বাকি ১শটি গাড়ি রিজার্ভে গেছে। এগুলো আজকে বিকেলে থেকে আসতে শুরু করবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
এমএফআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।