ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গাবতলীতে ঘরমুখো মানুষের চাপ কমেনি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
গাবতলীতে ঘরমুখো মানুষের চাপ কমেনি ঈদের পরও গাবতলীতে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঈদের আগেই ঢাকা ছেড়েছেন বেশিরভাগ নগরবাসী। অনেকে আবার ঈদুল ফিতর ঢাকায় উদযাপন করেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে ঈদের পরের দিনেও রাজধানী ছাড়ছেন মানুষ।

রোববার (১৭ জুন) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ও কল্যাণপুর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। তাই রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখো মানুষের চাপ একটু বেশি।

দূরপাল্লার বাসগুলোর কাউন্টারগুলোতে কথা বলে জানা যায়, গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে খুলনা, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও উত্তরবঙ্গের যাত্রীদের মধ্যে ঈদের পর উত্তরবঙ্গ রুটের যাত্রীদের চাপ বেশি। খুলনা, গোপালগঞ্জ ও কুষ্টিয়া রুটে মধ্যম পর্যায়ের চাপ থাকলেও বরিশাল রুটের চাপ একেবারে কম। ঈদের পরও গাবতলীতে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।  ছবি: জিএম মুজিবুরযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে রাস্তায় যানজটসহ বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভিড় থাকায় অনেকেই ঈদের আগে যেতে পছন্দ করেন না। আবার অনেক বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত নগরবাসীরা ঈদের দিন ছুটি না পাওয়ায় ঈদের পরই রওয়ানা দিয়েছেন বাড়ির উদ্দেশে। আবার ঈদের আগে টিকিট না পাওয়ার বিড়ম্বনায় থাকা যাত্রীদের সংখ্যাও একেবারে কম নয় বলে জানা গেছে।

ঈদের পরও বেশ কিছু যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে । তবে তাও ৫০ টাকার উর্ধ্বে নয়।

গাবতলী বাস টার্মিনালের সোহাগ পরিবহনের কাউন্টারে কথা বলে জানা যায়, ঈদের দিন (শনিবার) খুলনা, সাতক্ষীরা ও বেনাপোল রুটের যাত্রীদের তেমন চাপ না থাকলেও (রোববার) ভিড় বেড়েছে অনেক। সকাল ৭টা ও ৮টার সময় ও তার আগে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোতে সর্বোচ্চ শেষের ৫টা সিট খালি গেছে। কিন্তু এরপর থেকে বাসগুলোতে কোনো সিট ফাঁকা ছিলো না। অনেক যাত্রী সকালের বাসের টিকিট না পেয়ে ফেরত গেছেন। আবার রাতের অগ্রিম টিকিট কিনে নিয়ে গেছেন বেশ কিছু যাত্রী। ঈদের পরও গাবতলীতে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।  ছবি: জিএম মুজিবুরএদিকে উত্তরবঙ্গ রুটের বাসগুলোর কাউন্টারে দেখা গেছে যাত্রীদের চাপ ও টিকিট বিক্রেতাদের ব্যস্ততা। তার সঙ্গে রয়েছে কিছুটা অতিরিক্ত ভাড়ার দাবড়ানি।   হানিফ, ন্যাশনাল ট্রাভেলসসহ বেশ কিছু নাম করা পরিবহনের ক্ষেত্রে এ অভিযোগ কম থাকলেও এস আই ট্রাভেলস, আসাদ পরিবহনের মতো কম জনপ্রিয় পরিবহনের ক্ষেত্রে এ অভিযোগের ঝোঝাটা অনেক ভারী। এছাড়া কাউন্টার ছাড়া দূরপাল্লার লোকাল বাসগুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ রয়েছে।

দিনাজপুরগামী এস আই ট্রাভেলসের যাত্রী আজাদ বাংলানিউজকে জানান, হানিফে দিনাজপুরের ভাড়া চেয়েছিলো ৬৫০ টাকা। এটাও অন্যান্য সময়ের চেয়ে কিছুটা বাড়তি ঈদের ভাড়া। কিন্তু হানিফে ভালো সিট না পাওয়ায় এই পরিবহনে যাচ্ছি। কিন্তু টিকিট কেটেছি ৭শ টাকা দিয়ে। ঈদে অফিসের ডিউটি থাকায় আগে যেতে পারিনি। তাই আজ বাড়ি যাচ্ছি। পরিবারের সদস্যদের আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে কাউন্টারগুলোতে জানতে চাওয়া হলে তারা জানায়, ঈদের এই কয়দিনই আমাদের যা লাভ হয়। এরপর আর তেমন লাভ হয় না। কেননা উত্তরবঙ্গ রুটে বাসের সংখ্যা অনেক।

চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলসের যাত্রী রিনা আক্তার জানান, ঈদের আগে বাস ট্রেন কোথাও টিকিট পাইনি। কাউন্টারে গিয়েই দেখেছিলাম টিকিট শেষ। তাই এখন যাচ্ছি। যদিও খারাপ লাগছে সবার সঙ্গে ঈদ করতে না পেরে। অফিস থেকে ছুটি পাইনি আগে তাই এ অবস্থা। বাস দেখছি সঠিক সময়েই ছেড়ে যাচ্ছে। কোনো বিলম্ব দেখিনি।

অপরদিকে গাবতলী কল্যাণপুর থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটের যাত্রীদেরও চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা গেছে। তবে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে ওই এলাকার পর্যটন কেন্দ্রের ট্যুরিস্টদের সংখ্যার অধিক্যই বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার রিফাত বাংলানিউজকে জানান, কক্সবাজার রুটে সকালের বাস পুরো ভর্তি অবস্থায় ছেড়ে গেছে ও রাতের বাসে কোনো সিট খালি নেই। এছাড়া চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি রুটের বাসেও ভালো চাপ রয়েছে। এসব রুটের বেশিরভাগ টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়েছে। আর যাত্রীদের যে চাপ রয়েছে তাতে বাস খালি যাবে না। তাছাড়া এমনিতেই এই রুটগুলোতে যাত্রীদের চাপ সারাবছরই মোটামুটি থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৮
এমএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।