ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদের দিনেও কর্মমুখর জীবন যাদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮
ঈদের দিনেও কর্মমুখর জীবন যাদের ঈদের দিনেও কর্মব্যস্ত থাকতে হয় তাদের

ময়মনসিংহ: ঘরে ঘরে বয়ে যাচ্ছে ঈদুল ফিতরের আনন্দ। সাম্য আর ঐক্যের বন্ধনে অভূতপূর্ব এক সার্বজনীন উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছেন সবাই। পরিবার ও স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন।

এর বাইরেও এমনও অনেক মানুষ আছেন যাদের দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে কর্মস্থলেই থেকে যেতে হয়। নিজেদের চেনা কর্মস্থলেই রোজকার দিনের মতোই কাজের মাধ্যমেই আনন্দ খুঁজে নেন তারা।

 

দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে গিয়েই মূলত ঈদেও তাদের বাড়ি যাওয়া হয় না। থেকে যেতে হয় নিজ নিজ কর্মস্থলেই। রুঢ় এ বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই ঈদের দিনেও কর্মমুখর থাকেন তারা।  

এই তালিকায় রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) কর্মকর্তা, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, হাসপাতালের চিকিৎসক, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার কর্মীরা।  

শনিবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর পুলিশ লাইন্স জামে মসজিদে ঈদের জামাতেই নামাজ আদায় করেন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান।  

নগরবাসীর ঈদ আনন্দকে নিরাপদ রাখতে অন্যদের মতো ছুটি মেলেনি তারও।  

এই পুলিশ কর্মকর্তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায়। তবে স্ত্রী-সন্তান ময়মনসিংহেই তার সঙ্গে থাকায় শেকড়ের টানে ফিরতে না পারার কষ্ট অনেকটাই উবে গেছে।  

বাংলানিউজকে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ সদস্যরা ২৪ ঘণ্টাই দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করেন। এই ময়মনসিংহের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, ঈদে এটাই অনেক বেশি আনন্দের। রমজানেও নগরীতে একটি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেনি। ময়মনসিংহের ইতিহাসে এটি রেকর্ড’।  

ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ খান ঈদের দিনটিও কাটিয়েছেন নিজের চেনা কর্মস্থলেই।  

জরুরি দায়িত্বের কারণে তার বিভাগের কর্মকর্তাদের ঈদের ছুটি না থাকায় প্রিয়জনের সান্নিধ্য বঞ্চিত হচ্ছেন। ঈদে নতুন পাঞ্জাবি কিনেছেন। নগরীর কাঁচিঝুলি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরে নাস্তা খেয়ে সড়ক মনিটরিংয়ের কাজ শুরু করেন।  

ঈদের দিনেও দায়িত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠার বিষয়টি বলতে গিয়ে এ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, প্রথম প্রথম অনেক কষ্ট হতো। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।  

পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে বাঁধভাঙা ঈদ আনন্দের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার সুযোগ হয়নি ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও। তাদেরই একজন সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রহমান।  

যেকোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় ঈদের দিনেও কর্মস্থলে তাদেরকে সক্রিয় থাকতে হচ্ছে। তবে অন্যদিনের চেয়ে ব্যস্ততা খানিকটা কম।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারলে অনেক ভালো লাগতো। কিন্তু এই অঞ্চলের মানুষের স্বার্থেই নিজের অফিসেই ঈদ করছি। আনন্দের চেয়ে দায়িত্বটাই বড়।

দায়িত্বই ঈদের আনন্দকে ভাবতে দেয়নি চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম খান ওয়াসিমকে। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ ঘণ্টার ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রক্রিয়ার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।  

সাত সকালেই রোগীদের সঙ্গে এ চিকিৎসক ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। ঈদের নামাজ আদায় করে আবার নিজ দায়িত্বে মন দিয়েছেন।  

এ চিকিৎসক বলছিলেন, ‘ঈদ বলেই হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকবে না বিষয়টি এমন নয়। জরুরি যে কোন রোগী আসতে পারে। তাদের সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের। এ দায়িত্ব থেকেই ঈদের দিনেও স্বাভাবিক নিয়মেই কাজ করছি’।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮ 
এমএএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।