সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের সাইফুর রহমান রোডের মনু প্রতিরক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থান দিয়ে বাঁধ চুঁইয়ে পানি প্রবেশ করছে। সেন্ট্রাল রোডের প্রায় পাঁচ ফুট উপরের স্তরে প্রতিরক্ষা বাঁধের ভেতরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সেন্ট্রাল রোডের একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর এই রোডে কয়েক শতাধিক দোকান রয়েছে। এসব দোকানের বেশিরভাগ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঈদের আগের দিন শপিং মলের মানুষের ভিড় থাকার কথা হলেও সড়ক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে করে ব্যবসা বন্ধ রয়েছে অনেকের।
ব্যবসায়ী মাধব কর্মকার বাংলানিউককে বলেন, শহর প্রতিরক্ষা বাঁধে ফাটল ধরে চুঁইয়ে পানি ঢুকছে শহরে। আমার দোকানে পানি ঢুকছে। নদীর পানি আরও একটু বাড়লে যেকোন সময় বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শহরে পানি ঢুকলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ইতোমধ্যে শহরবাসীকে সতর্ক করতে মাইকিং করে নিরাপদে স্থানে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পাউবো ভাঙন মোকাবেলায় কাজ করছে। আশা করছি এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ হবে।
এদিকে, উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহরে প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এর ফলে মনুর সঙ্গে ধলাই নদের পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই পানি দ্রুত গতিতে মনু নদে গড়াচ্ছে। সর্বশেষ মনুর পানি শহরের অংশে বিপদসীমার ১৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজনগর উপজেলার কোনাগাও ও প্রেমনগর এলাকায় মনু নদের নতুন দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে, মনুর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মুমরুজপুর, কামালপুর, মিরপুর, পাগুরিয়া, নতুনব্রিজ ও আখাউলকুরা এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে বাঁধ চুঁইয়ে ও উপচে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, উজানের পানি নিম্নাঞ্চলে আসছে। উজানে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশহর ও তার আশপাশে বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে, কুশিয়ারা ও মনুর সংযোগ স্থানে কুশিয়ারার পানি উপরে রয়েছে এর ফলে মনুর পানি বের হতে পারছেনা। এতে করে শহরের দিকে পানি জমছে। পানি না নামলে শহরে ঝুঁকি বাড়বে। স্থানীয় প্রশাসন নিয়ে আমরা শহর রক্ষায় তৎপরতা চালাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৮
এনটি