ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধলাই-মনু’র পানি বিপদসীমার ওপর, ৩০ গ্রাম প্লাবিত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
ধলাই-মনু’র পানি বিপদসীমার ওপর, ৩০ গ্রাম প্লাবিত বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ছবি বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও বাড়তে পারে।

সর্বশেষ বুধবার (১৩ জুন) বিকেল ৩টা পর্যন্ত মনু নদের পানি বিপদসীমার ১৭৭ সেন্টিমিটার ও ধলাইতে বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিগত ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পানি প্রবাহের রেকর্ড করেছে মনু নদ।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, মনুতে তিনটি ও ধলাইতে পাঁচটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে অন্তত ৩০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবা) এর তথ্যমতে ১১-১২ জুন তারিখে ২৪ ঘণ্টায় মনু নদে স্বাভাবিক স্তর থেকে ৩২৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে ধলাই নদের পানিও।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাশর ও চেরাপুঞ্জি এলাকায় ভারী বর্ষণের ফলে মনু ও ধলাই নদে আকস্মিক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ৪৮ ঘণ্টায় ভারতের কৈলাশহর এলাকায় ১৭৪ মিলি ও চেরাপুঞ্জি এলাকায় ২৬৮ মিলি বৃষ্টিপাতের রেকর্ড হয়েছে। এছাড়া ভারতে অতিবৃষ্টির ফলে মনু নদের ভারতের অংশে কয়েকটি সংযোগ ছড়ার মুখ খুলে দেয়ায় পানির পরিমাণের সঙ্গে গতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে নদীর পানি বেড়ে বাঁধ উপচে পানি গ্রামে প্রবেশ করছে। এতে করে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে নতুন নতুন এলাকায়।

রাজনগর কামারচাক ইউনিয়নের বাসিন্দা গোপাল দেবনাথ বাংলানিউজকে বলেন, গত এক যুগেও এতো পানি মনুতে দেখিনি। বাঁধ ভেঙে ও উপচে পানি গ্রামে প্রবেশ করছে। অনেক স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে পুরো এলাকা তলিয়ে যাবে।

এদিকে, আকস্মিক পানি বাড়ায় মনু নদের কুলাউড়া উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের তেলিবিল, চাতলাপুর ও টিলাগাও ইউনিয়নের বালিয়া এলাকায় মঙ্গলবার (১২ জুন) রাত থেকে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। এর ফলে মাতাবপুর, মাদানগর, চক রণচাপ, হাসিমপুর, বাড়ইগাও ও মন্দিরাসহ কয়েকটি এলাকায় নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এছাড়া উপজেলার সাধনপুর, কাউকাপন, বাশউরী ও নোয়াগাও এলাকায় বাঁধ অতিক্রম করে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবা) এর নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাষ বলছে আগামী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে মনু ও ধলাই নদের পানি আরও বাড়তে পারে। এখন পর্যন্ত পানি বেড়ে চলছে। তবে পানির গতি কমে আসছে। মনু ও ধলাই যে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে তা অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।

**মৌলভীবাজারের ধলাই-মনু নদের পানি বিপদসীমার ওপরে, ভাঙন

বাংলাদেশ সময়: ২০৩১ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।