ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গ্যাস সংকটে নাকাল নগরবাসী, তিতাস তাকিয়ে এলএনজির দিকে

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
গ্যাস সংকটে নাকাল নগরবাসী, তিতাস তাকিয়ে এলএনজির দিকে গ্যাসের অভাবে নিভু নিভু চুলা/ফাইল ফটো

ঢাকা: সকালে চলে যায়, সারাদিন থাকে না। গ্যাসের দেখা মেলে রাত ১২টার পর। বিকেলে ইফতারি তৈরি কিংবা রাতের খাবার রান্নার সুযোগ খুবই কম। মধ্যরাতে একবারে সেহরি ও ইফতারের প্রস্তুতি সারতে হয়।

না হলে ফ্রিজের বাসি ভাত দিয়ে সারতে হয় রাতের খাবার। অনেক সময় সে ভাত গরম করে খাওয়ার মতোও উপায় থাকে না।

 

যাদের বাসায় ওভেন রয়েছে তাদের কিছুটা রক্ষা। কিন্তু যাদের নেই তারা যাবেন কোথায়। গ্যাস সংকটে নগরবাসী যখন নাকাল, তখনও বাড়িওয়ালা মাসে গ্যাস বাবদ ৮শ টাকা আদায় করছেন কড়ায়-গণ্ডায়।

রাজধানীর ছোলমাইদ এলাকার বাসিন্দা সোহেল রহমান আক্ষেপ করে বলছিলেন এমন কথা । অনেকদিন ধরেই এ অবস্থা চলছে। শুধু ছোলমাইদ এলাকা নয়, রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বনশ্রী, বকশীবাজার, পুরান ঢাকাও তীব্র গ্যাস সংকটের খবর মিলছে।

বনশ্রীর অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই খারাপ। দিনে গ্যাস থাকে না বলে জানিয়েছেন ডি ব্লকের বাসিন্দা রনি মিয়া। রোজা করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের জন্য।

মোহাম্মদপুর কাদেরাবাদ হাউজিং থেকে গৃহিণী ওহি বাংলানিউজকে বলেন, গ্যাস সকাল ৮টায় চলে যায়, আসে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে। মাত্র আড়াইঘণ্টার মতো স্থায়ী থেকে আবার চলে যায়। চাপ থাকে কম। এরপর রাত ১২টার আগে আর দেখা মেলে না।

এ অবস্থা অনেকদিন ধরেই চলছে। আত্মীয়-স্বজন এলে চরম বিব্রত হতে হয় বলেও জানান তিনি।

রায় সাহেব বাজারের কলতাবাজার গৃহিণী নাবিলা বিনতে মানজুর বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েক দিন ধরে দিনে গ্যাস পাওয়া যায়নি। রাত ১২টায় গ্যাস আসতো, সকাল ৮টার দিকে চলে যেত। এতে এলাকাবাসী চরম বিপাকে।

তবে শুক্রবার থেকে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সংকট রয়েছে। রোববার দুপুরের পর চাপ কম ছিল। সন্ধ্যায় গ্যাস এলেও চাপ তুলনামূলক কম। শনিবার সকালে গ্যাস ছিল স্বাভাবিক। তবে দুপুরের পর কমে যায়।

মিরপুরের বাসিন্দা শারমিন লোপা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মিরপুর -২ ডি ব্লকে গ্যাস নেই-ই। একদম আসে না। পাশের ব্লকে ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে রান্না করে আনা হয়। সমস্যা শুধু ডি ব্লকে। কেন? কোনো সমাধান আছে?’

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) প্রকৌশলী মীর মসিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রায় ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে এই সংকট।

আল্টিমেট সলিউশন এলএনজি উল্লেখ করে তিতাস গ্যাস এমডি বলেন, এলএনজি না আসা পর্যন্ত পুরোপুরি মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

গ্যাস সংকটের কারণে সরকার এলএনজি আমদানির জোর উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি ৫শ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহে সক্ষম ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করেছে। পরিকল্পনা রয়েছে জুনে পাইপ লাইনে সরবরাহ করার।

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
এসআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।