ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফরিদপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
ফরিদপুরে ডায়রিয়ার প্রকোপ হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা

ফরিদপুর: ফরিদপুরে জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। গত দু’দিনে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৭৩ জন ভর্তি হয়েছে। বেড না থাকায় অনেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। 

রোববার বেলা ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায় ফরিদপুর জেনারেল হসাপাতালের ডাইরিযা ওয়ার্ড রোগীতে ভরে গেছে। ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা কম হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের স্টাফ নার্স গোলাপী বেগম জানান,  শুক্রবার দুপুরের পর থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত মোট ৭৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রতিমূহূর্তে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফরিদপুর জেলা ছাড়াও রাজবাড়ী, মাগুরা, মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলা থেকেও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসছেন। গত এক সপ্তাহে এ হাসপাতাল থেকে ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছেন ৩০৫ জন।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চরভদ্রাসন উপজেলার গৃহবধূ শাহীনূর বেগম (৩৪)। তার স্বামী মো. তোফাজ্জেল জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন তার স্ত্রী। রাতেই তিনি স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন।  

তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৪ ঘন্টায় আমার স্ত্রীকে শুধু স্যালইন দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক ঠিকমতো পরীক্ষাই করেননি। ওয়ার্ডের বেড সংখ্যা কম হওয়ায় বারান্দায় রোগীরা

ফরিদপুরে সালথা উপজেলার সোনাপুর গ্রাম থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার দ্বিতীয়বারের মত ভর্তি হয়েছেন আজাদ মোল্লা (২৮)।  

তিনি জানান, তিনি গত সোমবার রাতে প্রথমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা নিয়ে গত শুক্রবার সকালে চলে যান। কিন্তু রাতে অবস্থার অবনতি হলে তিনি হাসপাতালে এসে আবার ভর্তি হয়েছেন।  

তার অভিযোগ, ডাক্তার ঠিকমতো নজর দিচ্ছেন না। কিছু জানতে চাইলে শুধু বলেন, সারতে অনেক সময় লাগবে।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা গণেশ আগরওয়ালা বলেন, সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাসে সারাদেশে ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায় মূলত গরমের কারণে। গত কয়েক বছর ধরে এ সময়ে রোজার কারণে রোগীর সংখ্যা একটু বেশি হচ্ছে তৈলাক্ত খাবার খাওয়ায়।  

তিনি বলেন, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়ার কোন ইউনিট না থাকায় সব রোগীকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আশেপাশের জেলা থেকে রোগীরা এসে ভর্তি হচ্ছে। এজন্য চাপ বেশি।  

তিনি বলেন, ১০০ শয্যার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ১৮টি। রোগী বেশি হওয়ায় বিকল্পভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে।  

ডায়রিয়ার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত প্রতিষেধক আছে এবং চিকিৎসকরা কোনো গাফিলতি করছেন না বলে দাবি করেন তিনি।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের কনসালট্যান্ট সৈয়দ ওবায়দুর রহমান জানান, আবহাওয়া পরিবর্তন ও গরমের কারণে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।  

তিনি বলেন, যে কোনো খাবার বিশেষ করে তেলযুক্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। বিষয়ে বেশি করে সচেতন থাকতে হবে, তবেই ডায়রিয়া থেকে মুক্ত থাকা যাবে। তবে এটা নিয়ে শংকার কিছু নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।