দীর্ঘদিনের খুঁড়ে রাখা গৌরনদীর ভূরঘাটা থেকে সাউদের খাল পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় যানবাহন চালাতে চালাতে চালকরা যেমন ‘অভিজ্ঞ’ হয়ে উঠেছেন, তেমনি যাত্রীরাও হয়ে গেছেন ‘অভ্যস্ত’।
এদিকে মেরামতকাজ চললেও সদ্য শেষ হওয়া বরিশাল থেকে গৌরনদী উপজেলার সাউদের খাল পর্যন্ত সড়কে সৃষ্ট গর্ত ও খানাখন্দের কারণে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ঈদের বহু আগেই বরিশাল থেকে ভুরাঘাটা পর্যন্ত মহাসড়কের ৪৮ কিলোমিটারের পুরোটাই ভোগান্তিবিহীন হবে বলে দাবি করেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তবে তাদের দাবির ভিত্তি কি তা কারো জানা নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল থেকে বার্থী পর্যন্ত সদ্যসমাপ্ত সড়কের বেশ কিছু জায়গায় ছোট-বড় বেশ কিছু গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যা খোঁড়াই করে মেরামতের কাজ চলমান। পাশাপাশি ভূরঘাটা থেকে গৌরনদীর দিকে প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য প্রাথমিক স্তরের কাজ শেষে ফেলে রাখা হয়েছে।
অথচ এখান দিয়ে নিয়মিত গাড়ি চলাচল করায় কোথাও কোথাও ছোট-বড় গর্ত, আবার কোথাও কোথাও ঢেউয়ের মতো উঁচু নিচু হয়ে গেছে। এহেন বেহাল রাস্তা দিয়ে চলাচলের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে। পাশাপাশি গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
গৌরনদীর বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল অংশের সড়কের অবস্থা খারাপ ছিল। সড়ক প্রশস্তকরণসহ সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও নানান অযুহাতে এ কাজও চলছে মাসের পর মাস ধরে ঢিমেতালে।
তিনি বলেন, আবার কাজ শেষ হতে না হতেই মৌসুমের প্রথম দিকের বৃষ্টিতেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আবার অনেক জায়গা দেবে গিয়ে উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। ফলে সড়কটি সংস্কারের পর কতোদিন ভালো থাকবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকার মানুষ।
এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যানবাহনের চালক দেলোয়ার হোসেন। তিনি জানান, ভূরঘাটা ব্রিজের পর থেকে গৌরনদীর বার্থী মন্দির পর্যন্ত সড়ক এখনো খারাপ অবস্থাতেই রয়েছে। যদিও সড়কের ওই অংশটি খুঁড়ে পাথর ও বালুর মিশ্রণ ফেলা হয়েছে। কিন্তু এর ওপর এখনো কার্পেটিং করা হয়নি। ফলে পাথর-বালুর মিশ্রণ সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, উঁচুনিচু হয়ে রয়েছে। যা ভোগাচ্ছে সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের।
এদিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের পর বার্থী পর্যন্ত অনেক জায়গাতেই মৌসুমের প্রথম বর্ষার পর গর্তের সৃষ্টি হয়, যা গত কয়েকদিন ধরে ভরাট করার চললেও সড়কের স্থায়িত্ব কতোদিন হবে এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বর্ষা পুরোপুরি শুরু হলে সড়ক আবারো খানা-খন্দে ভরে যাবে---এ আশঙ্কা এলাকার মানুষের।
এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আবু হানিফ বলেন, সড়কের যেসব জায়গায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তা ঠিকাদারের লোকজনই ঠিক করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি ভুরাঘাটা থেকে বরিশাল অংশের যেটুকু সড়কের সংস্কারকাজ এখনো শেষ হয়নি, বৃষ্টি না হয়ে আবহাওয়া ভালো থাকলে তা কয়েকদিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। তবে গত ২ দিনে বৃষ্টিতে কোনো কাজই করা সম্ভব হচ্ছে না।
নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, যথাসময়ে সঠিক নিয়মে সড়কের কাজ শেষ হবে। আর ঈদে সাধারণ মানুষকে কোনো ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে দেয়া হবে না।
এদিকে বরিশাল-পটুয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের লেবুখালি ফেরিঘাট এলাকা এবং বরিশাল-ভোলা জাতীয় মহাসড়কের বরিশাল অংশের লাহারহাট ফেরিঘাট অংশের আধ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে রয়েছে। এছাড়াও পটুয়াখালী কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের কলাপাড়ার পাখিমাড়া বাজার থেকে শুরু করে কুয়াকাটা পর্যন্ত রাস্তায় ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের বরিশালের অংশের রূপাতলী থেকে কালিজিরা ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় অনেকটাই ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
এমএস/জেএম