ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভোলার দুই মহাসড়কের ১২ কিলোমিটারই যেন মরণফাঁদ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৬ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
ভোলার দুই মহাসড়কের ১২ কিলোমিটারই যেন মরণফাঁদ ভোলার রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: দ্বীপজেলা ভোলার দুটি মহাসড়কের ১২ কিলোমিটার সড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ দুই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই। পাশাপাশি ছোট-বড় নানান দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়িত।

আর মেরামতের উদ্যোগ নিলেও চলমান বর্ষামৌসুমে কাজ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ফলে ঈদের সময়ও এ সড়কে ঘরমুখো যাত্রীদের পোহাতে হবে নারকীয় ভোগান্তি।

 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পরানগঞ্জ-চরফ্যাশন-বাবুরহাট সড়ক নামে কাগজে কলমে থাকলেও ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়ক নামে পরিচিত সড়কটির দূরত্ব ১১০ কিলোমিটার। এ সড়কটিই জেলা সদরের সাথে ৫ উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র ভরসা।

আর সড়কটির ডাওরী থেকে লালমোহন উপজেলা পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পথ দীর্ঘ এক বছর ধরে বেহাল পড়ে রয়েছে। সড়কের কোথাও উঁচু-নিচু আবার কোথাও ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে। এতে করে হালকা বৃষ্টি হলেই খানা-খন্দে পানি জমে সৃষ্টি হয় জলবদ্ধতার। তখন যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হয় মারাত্মক বিঘ্ন ও বিপদ।

সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীরা জানিয়েছেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সরাসরি, লোকাল ও দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। বেহাল সড়কের কারণে প্রায়ই যানবাহনগুলো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

যাত্রীরা জানান, ভোলা থেকে চরফ্যাশন পর্যন্ত পুরো ৭০ কিলোমিটার যাত্রাপথ সহজ হলেও ডাওরী থেকে লালমোহন পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পথ চরম বিড়ম্বনা আর কষ্টে ফেলে দেয়। যাত্রাপথ শান্তিময় না হয়ে  হয়ে ওঠে দুর্ভোগ ও বিপদময়।

এ বিষয়ে ভোলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম জানান, ভোলা-চরফ্যাশনের সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক মেরাতমের জন্য ৩৩ কোটি টাকার বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও শেষ। এরই মধ্যে কাজও শুরু হয়ে গেছে। তবে ঈদে যাতে যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে না হয় সেজন্য চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে।

অপরদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে ভোলা জেলার যোগাযোগের অন্যতম সড়ক ভোলা-লক্ষ্মীপুর-বরিশাল জাতীয় মহাসড়ক। জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে জড়িয়ে থাকা এই মহাসড়কের ভোলা অংশের ভেদরিয়া থেকে ইলিশা পর্যন্ত দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। যেখানে পরানগঞ্জ থেকে ইলিশা জংশন পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক এখন অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী।  

ভোলা-লক্ষীপুর-বরিশাল জাতীয় মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজারো ভারী, মাঝারি ভারী ও হালকা যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে অল্প বৃষ্টিতেই জমে যায় পানি। জলাবদ্ধতার সাথে সাথে সড়ক হয়ে যায় কর্দমাক্ত।

এমন অবস্থার পরেও সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের।

শ্রমিকরা জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি বিড়ম্বনা পেরিয়ে ইলিশাতে আসতে না আসতেই সড়কের কারণে পড়তে হয় আরেক বিড়ম্বনায়। যা চলছে গত এক বছরের অধিক সময় ধরে। ছোট-বড় গর্তে ঠাসা উঁচু-নিচু এই সড়কে প্রায়ই বিকল হচ্ছে মালবাহী পরিবহনগুলো। ঘটছে দুর্ঘটনা।

আর ঈদের আগে এ সড়ক মেরামত করা না হলে ভোলামুখী মানুষের ভোগান্তির সীমা থাকবে না বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
 
এ বিষয়ে ভোলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল ইসলাম বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য ১১ কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। বর্ষার মধ্যে কাজ শেষ না হলেও অন্তত ঈদের আগে রাস্তাটি চলাচল উপযোগী করে তোলা হবে।

এদিকে ভোলা-চরফ্যাশন ও ভোলা-বরিশাল-লক্ষ্মীপুর মহাসড়কের ১২ কিলোমিটার দ্রুত মেরামত করে স্বাভাবিক চলাচল উপযোগী করে তোলার দাবি ভোলাবাসীর।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৮
এমএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।