শনিবার (২৬ মে) সকালে পুরো বিহারী ক্যাম্প এলাকা ঘিরে ফেলে র্যাব সদস্যরা। এরপর প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলে মাদক বিরোধী সাঁড়াশি অভিযান।
অভিযানে মাদক বিক্রয় এবং মাদক সেবনের অভিযোগে শতাধিক বাসিন্দাকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের মাদক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার পরে জেনেভা ক্যাম্পের চারপাশ ঘিরে ফেলে র্যাব। পার্শ্ববর্তী মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভবনের ছাদ থেকে উড়ানো হয় ড্রোন। কিছুক্ষণ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর একযোগে চারপাশ থেকে অভিযান শুরু করে র্যাব।
অভিযানের সময় বিভিন্ন দোকান ও বাসায় তল্লাশি চালানো হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকেই ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ড্রেনে ফেলে দেয়। কিন্তু র্যাবের ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে ময়লার স্তূপসহ বাসা ও দোকান থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদক উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে অংশ নেওয়া র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, কয়েকদিন ধরেই সাদা পোশাকে র্যাব সদস্যরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। এরপর সার্বিকভাবে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকাস্থ র্যাবের-১, ২, ৩, ৪, ১০ ব্যাটালিয়নসহ সদর দফতরের একটি টিম মিলে এ অভিযান চালানো হয়। এসময় ব্যাটালিয়নের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
তবে এসময় জেনেভা ক্যাম্পের দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ইসতিয়াক, ষোল ও পঁচিশের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, এ এলাকার অনেকগুলো এন্ট্রি পয়েন্ট রয়েছে। ছোট একটি জায়গার মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক লোকের বাস। ভেতরের জায়গাগুলো অনেক সরু। অনেকেই পারিবারিকভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী এখানে অভিযান চালানোর সময় বিভিন্ন সময় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তাই যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে আজ আমাদের কোনও বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি। এখানকার কমিউনিটিরা আমাদের সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, জেনেভা ক্যাম্প কেন্দ্রিক মাদক ব্যবসার বিষয়ে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সে অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে নারীসহ শতাধিক জনকে আটক করা হয়েছে। যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে আরেকটু যাচাই-বাছাই করা হবে। যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
জেনেভা ক্যাম্পে র্যাবের অভিযান শুরুর কথা জানিয়ে মুফুতি মাহমুদ খান বলেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যেভাবেই হোক যারা মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের এ ব্যবসা ছাড়তে হবে।
তিনি বলেন, এখানে আরও অভিযান পরিচালনা করা হবে। যেভাবেই হোক মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে যা যা করা প্রয়োজন, র্যাবের পক্ষ থেকে তাই করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
পিএম/আরবি/