ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঈদে ভোগান্তি কমছে না যশোর-বেনাপোল সড়কে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
ঈদে ভোগান্তি কমছে না যশোর-বেনাপোল সড়কে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের বেহাল দশা-ছবি-বাংলানিউজ

বেনাপোল (যশোর): ভারতের সাথে আমদানি-রফতানি আর পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াতের সবচেয়ে ব্যস্ততম রুট যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে সংস্কার কাজ ঈদের আগে আর শুরু হচ্ছে না। ফলে এ পথে মানুষের যে ভোগান্তি তা থেকেই যাচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর এলাকার রাস্তাঘাটের করুণ দশায় ব্যাহত হচ্ছে আমদানি রফতানি বাণিজ্য। সড়কের খানা-খন্দ আর জমে থাকা কাদা মাটিতে আটকে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়ছেন চালকরা।

সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, মহাসড়কে চলাচলের একেবারে অনুপোযোগী জায়গাগুলোতে ইটের সোলিং বসিয়ে আপাতত কিছুটা চলাচলের উপযোগী করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে টেকসই কাজ শুরু হবে।

এদিকে বেনাপোল বন্দরে চাহিদার তুলনায় দূরপাল্লার কোচ কম থাকায় এ পথে ঘরমুখো মানুষকে পড়তে হয় বাস সংকটে। এ রুটে দূরপাল্লার কোচ সার্ভিস বাড়ানোর দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সরেজমিনে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, সড়কটির ৩৫ কিলোমিটারের প্রায় ৩০ কিলোমিটার ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে রয়েছে। সড়কের মাঝ বরাবর এমন বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তা দেখলে আতকে উঠবেন যে কেউ। বিশেষ করে রাতে চলাচলের সময় গর্তে পড়ে বিকল হয়ে পড়ছে যানবাহনগুলো। সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন রাস্তার নষ্ট পিচ, খোয়া তুলে সেখানে ইটের সোলিং বসাচ্ছেন চলাচলের কিছুটা উপযোগী করতে। এমন কাজে ক্ষোভে ফুসে উঠছেন যাত্রী ও এলাকাবাসী।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, ভারতের সাথে স্থলপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য খাতে সরকারের যে রাজস্ব আয় হয় তার ৭০ শতাংশ আসে বেনাপোল বন্দর থেকে। আর ১০ শতাংশ সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরে। এই দুই বন্দর থেকে দেশের অভ্যন্তরে পণ্য পরিবহনের প্রধান রুট যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ মহাসড়কটি ব্যবহারে মানুষের দুর্ভোগ বাড়লেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা তাকে অবাক করেছে।

সড়কের দুর্দশা প্রসঙ্গে ইজিবাইক চালক রিপন বলেন, সমস্ত রাস্তাজুড়ে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে আটকে পড়ার ভয়ে বড় পরিবহনের চালকেরা ছোট গাড়িকে সাইড দিতে চায় না। এতেই বেশি ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত আমরা সড়কটিতে ভালো মানের সংস্কার কাজ চাই।

যশোর-বেনাপোল সড়কে বাস চালক দবির হোসেন বলেন, রাস্তা বেশি পরিমাণে খারাপ হওয়ায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ভেবেছিলাম ঈদের আগে হয়তো এ সড়কে কাজ শুরু হবে। কিন্তু এখন শুনছি তা হচ্ছে না। এতে আমাদের কষ্ট থেকেই গেল।

বেনাপোল রুটের গ্রিনলাইন পরিবহনের ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ বলেন, এ রুটে দিন দিন দেশি-বিদেশি মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে গ্রিন লাইনের কয়েকটি নতুন কোচ সংযোগ করা হয়েছে। আরো কোচ বাড়ানোর জন্য মালিক পক্ষকে জানানো হয়েছে।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে বন্দরে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অনুন্নত সবখানে কাজ হবে। তবে এসব কাজ শেষ হতে আরো কিছু সময় লাগবে। তখন আর মানুষের দুর্ভোগ থাকবে না।

জানা যায়, ২০১৩ সালে ১৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে যশোর শহরের দড়াটনা মোড় থেকে নাভরন পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হয় বিটুমিনে। যশোরের পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এ কাজ করে। কিছুদিনের মধ্যে সড়কের অধিকাংশ স্থানে পিচ-খোয়া উঠে যায়। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে রাস্তা টেকসই হয়নি। সে থেকেই এ রুটে মানুষের দুর্ভোগ।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, সড়কটি পুনর্নির্মাণের জন্য ৩০০ কোটি টাকার বাজেট হয়েছে। আগামী অর্থবছর টেকসই কাজ শুরু হবে। আপাতত মহাসড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে ইটের সোলিং ও গর্তে পিচ-খোয়ার কার্পেটিং কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
এমআরএম/এমজেএফ

আরও পড়ুন...

খুলনার ৪ জেলা সড়কের করুণ হাল

** চলাচলের অযোগ্য সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক

**বাগেরহাটে পিচঢালা রাস্তায় ইটের সলিং

**লোহাগড়া-লাহুড়িয়া সড়কে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।