বুধবার (২৩ মে) রাজধানীর মিরপুর এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন গলিতে ও সড়কের পাশে বিচ্ছিন্নভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ইফতার বিক্রির দোকান। মিরপুর ১ ও ২ নম্বরসহ শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এলাকায় স্যাঁতস্যাঁতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে টেবিল পেতে ইফতার বিক্রি করছেন অনেকে।
এদিকে, মিরপুর-১০ এলাকার বেনারশি পল্লীতে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার পানি নামতে না নামতেই বেগুনি, পিঁয়াজু, জিলাপি, আলুর চপ, ছোলা, সবজি চপ, বুন্দিয়াসহ স্পেশাল আইটেম হিসেবে হালিম নিয়ে হাঁকডাক দিচ্ছেন ইফতার বিক্রেতা সজিব। তিনি খালি হাতেই খাবার ধরছেন আবার অন্য কাজও করছেন।
বাংলানিউজকে সজিব বলেন, ‘আমি শুধু রমজান মাসেই এ ব্যবসা করি। আমার কাপড়ের ছোট দোকান আছে। সেখানে ছেলেকে বসিয়ে আমি রাস্তায় ইফতার বানিয়ে বিক্রি করছি। যাতে বেশি টাকা আয় কইরা ঈদটা ভালো মতো কাটাইতে পারি।
রাস্তার পাশে খোলা ও নোংরা পরিবেশে ইফতার বিক্রি করেছেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ময়লা তো রাস্তায়। টেবিল তো পরিষ্কার। তাহলে সমস্যা কি? আর মানুষ তো কিনে খাচ্ছে। একদিনও তো খাবার বিক্রি না করে ফেরত নিয়ে যেতে হয় না। আর এখন তো ধূলাবালি নাই। বৃষ্টি হইছে একটু আগে। রাস্তায় ধূলাবালি থাকলে খাবার পলিথিন দিয়ে ঢাইকা বিক্রি করি। এমন একই মন্তব্য ফুটপাতের প্রায় সব ইফতার বিক্রেতাদের।
শেওড়াপাড়ার বউবাজার এলাকায় ইফতার কিনতে আসা ফয়সাল রহমান জানান, মিরপুর এলাকায় অনেক ব্যাচেলররা থাকেন। যারা ছাত্র বা চাকরিজীবী। তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না বাসায় ইফতার বানানো। তাই রাস্তার পাশে থেকে আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু কিনে নিয়ে যাই। জানি খাবারগুলো অস্বাস্থ্যকর কিন্তু এটা তো একপ্রকার রেওয়াজ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রিন্সিপাল অ্যান্ড হেড অব নিউট্রিশন বিভাগের শাসসুন নাহার নাহিদ বাংলানিউজকে জানান, ভাজা পোড়া খাবারের কারণে গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি ভাজা-পোড়া খাবারগুলো শরীরের শিরা ধমনীতে চর্বির পুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। এতে হৃদরোগসহ উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, খোলা ও নোংরা স্থানের খাবারে ডায়রিয়ার ঝুঁকি আছে। এসব কারণে সম্প্রতি ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। তাই এসব খাবার পরিহার করা জরুরি। আমরা রমজানে তৈলাক্ত খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেই। পাশাপাশি বাইরের খোলা খাবার পরিহার করতে বলি। কারণ সারাদিন রোজা রাখার পর এসব খাবার স্বাভাবিকভাবেই গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে। আবার সুস্থ মানুষও এসব খোলা খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পরেন। এতে রমজান মাসে বুকে ব্যথাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৮
এমএএম/আরআইএস/