রমজান মাসে এমন গরমের কারণে জরুরি কাজ ছাড়া ঘর থেকে বেরুচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তবে খেটে খাওয়া দিনমজুরেরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
দিনাজপুরের এই তাপদাহ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অফিস বলছে, এই তাপমাত্রা আরও বাড়বে। বৃষ্টি হলেও সামান্য হতে পারে। তবে এই অঞ্চলের উপর দিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একটি তাপপ্রবাহ বয়ে যাবে। চলতি মাসে তাপমাত্রা কমার তেমন সম্ভাবনা নেই।
তাই তীব্র গরমে বেশি করে তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। একইসঙ্গে অতিভোজন ও তৈলাক্ত জাতীয় খাবার পরিহার করারও পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
আর মাত্র ক’দিন পর আসতে শুরু করবে লিচু, আমসহ বিভিন্ন ধরনের রসালো ফল। রসালো ফল উঠার আগেই বর্তমানে সূর্য উঠা থেকে ডোবা পর্যন্ত প্রচণ্ড তাপ আর প্রখর রৌদ্রের দহনে জ্বলছে পথ-প্রান্তর। আর সেসঙ্গে জ্বলছে জনজীবন ও প্রাণীকূল। দিনের বেলা বাইরে বেরুলে রোদের তাপ লাগলে প্রতি মুহূর্ত যেন শরীরে আগুন ছ্যাকার মতো। বৃষ্টিপাতের অভাবে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। বৃষ্টিপাতের অভাবে ও তীব্র তাপমাত্রার কারণে লিচুসহ সব ধরনের রসালো ফলের আকারের অগ্রসর বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।
শহরের বালুবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি দিনমজুর বাবুল হোসেন বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন থেকে যেভাবে তাপমাত্রা বাড়ছে, আমাদের তো বেঁচে থাকাই দায়। প্রখর রোদের মধ্যে থেকে সারাদিন কাজ করতে হয়। কাজ না করলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে না খেয়ে কাটাতে হবে। তবে এই গরমে কাজ করতে খুবই কষ্ট করতে হচ্ছে।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা বেড়েছে। আগামী কয়েকদিন আরো বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে। আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হলেও গরমের প্রভাব থাকবে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণের বৃষ্টিপাতেই এই গরম কমবে।
সোমবার (২১ মে) দিনাজপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মঙ্গলবার (২২ মে) দিনাজপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস ও বুধবার (২৩ মে) সকালে সর্বচ্চো তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩০ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদিনে তাপমাত্রা আরো বাড়বে। বাতাসের আদ্রতা রেকর্ড করা হয় গড়ে ৭২ শতাংশ। আগামী এক সপ্তাহে তাপমাত্রা আরো বাড়তে থাকার সম্ভবনা রয়েছে। তবে এরপরই ভারী বৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে এই তাপদহের শেষ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকতা (আরএমও) মো. পারভেজ সোহেল রানা বাংলানিউজকে জানান, অতিরিক্ত গরমে স্বাভাবিকভাবে পানিশূন্যতা জনিত রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এই সময় শিশুও বৃদ্ধদের বেশি করে নিরাপত্তায় থাকতে হবে। বেশি বেশি করে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তবে ডাবের পানি খেলে ভালো। এই গরমে দিনেরবেলা বাড়ি থেকে বের হলে ছাতা ব্যবহার করার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
এদিকে, বুধবার সকাল থেকে ঢাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে নাকাল হয়ে পড়েছে সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৮
এএটি