বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ঈদ যাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে নৌ-মন্ত্রীর নেতৃত্বে এরইমধ্যে দু’টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তবে সার্বিক দিক মাথায় রেখেই দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের পরিবহনে এরইমধ্যে ২০৯টি লঞ্চ প্রস্তুত করেছেন লঞ্চ মালিকরা। এর মধ্যে বিভিন্ন রুটের ৫টি নতুন বিশালাকৃতির লঞ্চ ঈদ উপলক্ষে নতুন যাত্রী পরিবহনে নামছে। অপরদিকে ২০৪টি লঞ্চের মধ্যে যেগুলো পুরনো বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ছিলো সেগুলোর বেশির ভাগেরই রং ও ত্রুটি সারিয়ে ফের চলাচল উপযোগী করা হয়েছে।
এছাড়া ঢাকা নদী বন্দরের যেসব পন্টুন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে সেগুলো মেরামত করছে নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। সব শ্রেণীর যাত্রীরা যেন টিকিট পান সেজন্য ঈদের ৮/১০ দিন আগে টিকিট বিক্রির জন্য কাউন্টার খোলা হবে বলেও আশা করছে বিআইডব্লিউটিএ। তবে মালিকরা বলছেন, এটা কোন কাজে লাগে না তাদের। অধিকাংশ টিকিট ফোনে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় লোকজনকে শুধু শুধু বসিয়ে রাখতে হয়।
এদিকে ঈদে লঞ্চ যাত্রীদের বাড়তি চাপ সামাল দিতে তিন ভাগে ছুটি দিতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে বিআইডব্লিওটিএ এবং লঞ্চ মালিকরা। এক্ষেত্রে একদিন সরকারি অফিস আদালত, অন্যদিন বিজিএমইএ’র অন্তর্ভুক্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান এবং আরেকদিন বিকেএমইএ’র অন্তর্ভুক্ত গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। তবে এটা সম্ভব না হলে অন্তত দু’দিনে যেন ঈদের ছুটি দেওয়া হয় সেই দাবি তাদের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের সময় চাপ বেশি থাকে। তবে এবার আমাদের পর্যাপ্ত লঞ্চ রয়েছে। তাই আশা করি যাত্রী পরিবহনে কোনো সমস্যা হবে না। তবুও নৌযানে বাড়তি যাত্রী কিছুটা উঠতে পারে। তবে এটি সহনশীল পর্যায়ে রাখা হবে। তাছাড়া আমরা যখন দেখবো কুলিয়ে উঠতে পারছি না, তখনই লঞ্চ ছেড়ে দেবো। আমাদের লঞ্চে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত বয়া, লাইফ জ্যাকেট রয়েছে। কোনো অসুবিধা হবে না।
এদিকে ঈদে নৌপথে যাতায়াত ঝামেলাহীন হবে দাবি করে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবীর বাংলানিউজকে বলেন, এবারের ঈদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ২০৯টি লঞ্চ চলাচল করবে। গত ঈদের তুলনায় এবার বড় ৫টি লঞ্চ বেড়েছে। তাই অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে কাউকে লঞ্চে ভ্রমণ করতে হবে না বলেও জানান তিনি।
ফিটনেসবিহীন নৌযান চলাচলের ব্যাপারে তিনি বলেন, একটি লঞ্চের গড় আয়ুষ্কাল থাকে ৩০ বছর। কিন্তু ৩-৪ বছর চলার পরেই অনেক লঞ্চের রং বা রিপেয়ারিং করার দরকার পড়ে, তার মানে এই নয় যে লঞ্চের ফিটনেস নেই। যখন ফিটনেস থাকে না তখন এমনি লঞ্চ আর চলতে পারে না!
নদী বন্দর ও নৌপথের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ১৭০ জন পুলিশ ফাঁড়িতে যোগ দিয়েছেন। সামনে আরো টিম আসবে। এখানে ঢাকা মহানগর পুলিশ, নৌপুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক মিলিয়ে প্রায় পাঁচ’শ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪৩ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
কেডি/জেডএস