শনিবার (১৯ মে) দুপুরে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় এমি।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার বরায়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৩.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় এমি।
অভাবের সংসারের ঘানি টানতে যখন ক্লান্ত তখন সুখের আলো দেখতে শুরু করছিলেন বড় মেয়ে এমিকে ঘিরে। আলোর ইশারা দেখানো এমিকে ঘিরে সুখ খুঁজছিলেন জারু মিয়া। মেয়েটি এবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় আনন্দে আত্মহারা ছিলেন এমির বাবা। কে জানতো সেই আনন্দ অকালে হারাবে তিমিরে।
চার ভাইবোনের মধ্যে এমি সবার বড়। রমজান মাস উপলক্ষে প্রতি বছর ক্বেরাত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এসব কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ শেষ করে এ বছর স্থানীয় আবু বক্কর সিদ্দিক মাদ্রাসার রমজানিয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পায় এমি।
ছোট ভাইবোন লেখাপড়া করছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম বৃদ্ধ জারু মিয়াও অসুস্থ। বাবার অভাবের সংসারে কিছুটা হলেও আলো ছড়াতে শুরু করে এমি।
শনিবার দুপুরে ক্বেরাত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে প্রাইভেটকার ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার প্রতিযোগিতায় প্রাণ হারায় এমি।
জারু মিয়ার সংসারে এখন চলছে শোকের মাতম। মেয়েকে হারিয়ে নির্বাক এমির বাবা-মা ও ভাইবোন।
জারু মিয়া বলেন, আমার মেয়ে চিরদিনের জন্য ঘুমিয়েছে। বাচ্চাদের আর কোরআন শিক্ষা দেবে না। বলবে না আর বাবা পড়াতে যাচ্ছি। ওর স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে শিক্ষকতা করবে, ভাইবোনদের পড়ালেখা করাবে। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ.কে.এম ফজলুল হক শিবলী বাংলানিউজকে বলেন, এ দুর্ঘটনায় আহত হন আরও চারজন। আহতরা ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
এনইউ/আরআর