ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টাকা দিলে দড়ি খোলে!

প্রশান্ত মিত্র, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
টাকা দিলে দড়ি খোলে! দড়ি উঁচু করে পার হচ্ছেন এক মোটরসাইকেল চালক। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা মহাখালী ট্রাফিক সিগন্যাল। টার্মিনালের বাসসহ ত্রিমুখী গাড়ির চাপের সঙ্গে সিগন্যাল লাগোয়া রেলক্রসিংয়ের কারণে এখানকার ব্যস্ততা কয়েকগুণ বেশি।

এ রেলক্রসিংয়ের উপর দিয়ে ইউটার্ন বন্ধে দড়ি বেঁধে রাখতে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশকে। আর কিছু মানুষ টাকার বিনিময়ে দড়ি খুলে গাড়ি ইউটার্ন নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে, তাও আবার ট্রাফিক পুলিশের সামনেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণে মহাখালী ট্রাফিক সিগন্যালের রাস্তাগুলোকে সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে। উঁচু রোড ডিভাইডার বসিয়ে আলাদা লেন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু রেলক্রসিংয়ের কারণে ফ্লাইওভারের নিচে অনেকখানি জায়গা ফাঁকা রয়েছে। ট্রেন চলাচল ছাড়া বাকি সময়ে জাহাঙ্গীর গেট থেকে বিভিন্ন গাড়ি মহাখালী রেলক্রসিং হয়ে আবার জাহাঙ্গীর গেটের দিকে ইউটার্ন নেয়।

এর ফলে রেলক্রসিংয়ের মুখে বাড়তি জটলা এড়াতে ‘দড়ি থেরাপি’ বেছে নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রেন আসা-যাওয়ার সময় দড়ি খুলে দেওয়া হয়, এরপর আবার দড়ি টেনে ইউটার্ন নেওয়ার পথ বন্ধ রাখা হয়।
দড়ি খুলে দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে।  ছবি: জিএম মুজিবুরকিন্তু এই দড়িতেই বাড়তি আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন কিছু মানুষ। পাশেই লেগুনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা কমিউনিটি পুলিশের পোশাক গায়ে কয়েকজন মিলে এ সুযোগ নিচ্ছেন।

দড়ি খুলে কিংবা উঁচিয়ে ধরে লেগুনা, প্রাইভেটকার, ট্রাকসহ অন্য যানবাহনগুলোকে ইউটার্ন নেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন তারা। বিনিময়ে চালকের কাছ থেকে আদায় করছেন ১০-২০ টাকা।  

এখানকার দায়িত্বরত এক ট্রাফিক পুলিশ জানান, ক্রসিংয়ের উপর দিয়ে ইউটার্ন নিতে না দিলে গাড়িগুলোকে আমতলী দিয়ে ঘুরে আসতে হয়। স্বল্প সময়ে পাড়ি দেওয়ার জন্য সবাই রেললাইনের উপর দিয়ে ইউটার্ন নিতে চায়। কিন্তু এর ফলে রেললাইনের উপরেই মারাত্মক জটলা হয়ে যায়। পরে ট্রেন আসলে তাড়াহুড়া করে গাড়ি সরাতে ঝামেলা হয়। তাই দড়ি দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

তবে, কমিউনিটি পুলিশরা টাকার বিনিময়ে গাড়ি পার হতে দেওয়ার বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

মিরপুর-মহাখালী রুটের লেগুনা ড্রাইভার আলামিন জানান, আমতলী দিয়ে ঘুরে আবার মহাখালী রেলক্রসিংয়ে আসতে প্রায় আধাঘণ্টা সময় লেগে যায়। এর চেয়ে ৫-১০ টাকা দিয়ে রেললাইনের উপর দিয়ে পার হয়ে যাওয়াই ভালো।

এদিকে, রাস্তা পারাপারে পথচারীদের বরাবরের মতোই উদাসীন দেখা গেছে। সিগন্যালের কাছেই ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও উঁচু রোড ডিভাইডার টপকে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হতে দেখা গেছে অনেককে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৮
পিএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।