ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইটভাটার ধোঁয়ায় ‘ব্ল্যাক টিপ’র কবলে আম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৫ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
ইটভাটার ধোঁয়ায় ‘ব্ল্যাক টিপ’র কবলে আম ব্ল্যাক টিপে আক্রান্ত আম

নাটোর: নাটোরের লালপুর উপজেলায় ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও উত্তাপে ‘ব্ল্যাক টিপ’ বা কালো আগা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে আম। ফলে গাছেই নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার আম।

ফসলি জমি ও বসতি এলাকায় গড়ে উঠা ইটভাটাগুলো এখন আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফল চাষিদের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অবৈধ ইটভাটা ও নতুন ইটভাটা নির্মাণ বন্ধে মানববন্ধন, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়াসহ নানা তৎপরতা চালাচ্ছে আম চাষিরা।

সম্প্রতি রোগাক্রান্ত এসব আম আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঠিয়েছিলেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। সেখানকার মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ড. হামিম রেজা স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন উপজেলা কৃষি বিভাগের হাতে এসে পৌঁছেছে। প্রতিবেদনে এ রোগকে ব্ল্যাক টিপ বা কালো আগা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ রোগের জন্য ইটভাটার কালো ধোঁয়াকে দায়ী করা হয়েছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, আম এ রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমে তার নিম্ন অংশে ছোট কালো দাগ পড়ে। পরে কয়েক দিনের মধ্যেই কালো দাগ বড় হয়ে ওঠে এবং পচে নষ্ট হয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, সরেজমিনে বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে এবং আখ চাষিদের ক্ষতির বিষয়টি উপলব্ধি করে এ সমস্যা নিরসনে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগকে বিষয়টি পরীক্ষাসহ প্রকৃত আম চাষিদের তালিকা এবং ক্ষতির পরিমাণের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিষম্ভরপুর গ্রামের আম চাষি এবং আম চাষিদের নেতা সোলাইমান হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এ অঞ্চলের মোমিনপুর, মোহরকয়া, বিষম্ভরপুর, ঢুষপাড়া, অমৃতপাড়া, রহিমপুর, হবিতপুর, কৃষ্টরামপুর, সাইপাড়া, আকবরপুরসহ এর আশেপাশের গ্রামের কয়েক’শ একর জমিতে আম বাগান আছে। এসব আম বাগানের আশেপাশে ফসলি জমিতে এবং বসতি এলাকায় ২৬টি ইটভাটা রয়েছে। আরো দুটি ইটভাটা চালুর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এসব ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও উত্তাপের কারণে আমে কালো দাগ হয়ে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।  

অমৃতপাড়ার আম চাষি আহম্মদ আলী বাংলানিউজকে জানান, ইটভাটার প্রয়োজন আছে কিন্তু সেটা হতে হবে নিয়ম মেনে। কিন্তু সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠা এসব ইটভাটা যেমন পরিবেশ দূষিত করছে তেমনি এ অঞ্চলের প্রধান আয়ের উৎস আম চাষিদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

লালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুল ইসলাম খান বাংলানিউজকে জানান, রোগাক্রান্ত আম পরীক্ষা করা হয়েছে। আম চাষিদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আম চাষিদের তালিকা ও মোট ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণের কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।