ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে পুলিশবাহিনীকে

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৪ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে পুলিশবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রাজশাহী: মানুষ বিপদের সময় পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য আসে। তাই সেবা ও মানবিক আচরণের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে।

বুধবার (১৬ মে) সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ৩৫তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের শিক্ষানবীস সহকারী পুলিশ সুপারদের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে চলা নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের অধিকার, মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

সমাজের নারী, শিশু ও প্রবীণদের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে।

এক বছরব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করায় নবীন কর্মকর্তাদের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধা জানান তিনি।

তিনি পুলিশবাহিনীর প্রশংসা করে বলেন, অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা বিধান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও অপরাধ দমন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ সদস্যরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পুলিশ জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের জন্য বহির্বিশ্বে প্রশংসা অর্জন করেছে।

পুলিশবাহিনীকে নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অপরাধের ধরন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে সিয়াবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে দক্ষ হতে হবে।  

‘মাদক সেবনকারী, সরবরাহকারী, মাদক ব্যবসায়ী বা উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। জঙ্গি দমনে পুলিশ যেমন সফল হয়েছে, তেমনি মাদক নির্মূলেও পুলিশ সফল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আজকে বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে বাঙালি জাতি গড়ে তুলতে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়েই সবাইকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে’।

সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর পুলিশকে দেওয়া নানা সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের বিভিন্ন স্তরে নারীদের নিয়োগ দিচ্ছি। ২০১৫ সাল থেকে ট্রাফিক বিভাগে নারীরাও নিয়োগ পাচ্ছে। আমরা সবার বেতন ১২৩ ভাগ বৃদ্ধি করেছি, যা পৃথিবীর কোনো দেশ, কোনো সরকার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্বগ্রহণের পর আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এটা আমাদের কাছে গর্বের।

বক্তব্য রাখতে গিয়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট অত্যন্ত সফলভাবে উৎক্ষেপণ করে বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে নতুন মর্যাদায় উন্নীত করেছি। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে চায়। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। পুলিশ একাডেমিকে ‘সেন্টার অব এক্সেলেন্স’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এর সাংগঠনিক কাঠামো সংস্কার, জনবল বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় যানবাহন, সরাঞ্জামাদি ও লজিস্টিক সরবরাহ আমরা অব্যাহত রেখেছি।

এর আগে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে একটি হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ একাডেমিতে পৌঁছান। পরে প্যারেড মাঠে গেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী তাকে স্বাগত জানান।

পরে প্রধানমন্ত্রী অভিবাদন মঞ্চে গিয়ে নবীন পুলিশের সশস্ত্র সালাম গ্রহণ করেন। পরে একটি খোলা জীপে চড়ে তিনি নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ নাজিবুর রহমান এনডিসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী এমাজ উদ্দিন প্রমানিক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য ফারুক চৌধুরী, বেগম আক্তার জাহান এমপি, আয়েন উদ্দিন এমপি, এনামুল হক এমপি, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নুর-উর-রহমান, জেলা প্রশাসক এসএম আবদুল কাদেরসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

 

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৮
এসএস/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।