ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভাঙা সেতুতেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৪৭ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
ভাঙা সেতুতেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার ভাঙা সেতু দিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। ছবি: বাংলানিউজ

পিরোজপুর: পিরোজপুর সদর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুর একাংশ ভেঙে গেছে নয় মাস আগে।

স্থানীয়রা সেতুর ভেঙে যাওয়া অংশে সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সেতু ভেঙে যাওয়ায় ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে মোটরসাইকেল, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আফাজ উদ্দিন খালের ওপর ৭০ ফুট দৈর্ঘ্যের লোহার সেতু নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন সংসদ সদস্য দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এক বছর আগে বালুবাহী একটি ট্রলার খাল দিয়ে যাওয়ার সময় সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে সেতুটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। গত বছরের জুলাইতে সেতুর উত্তর অংশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকে স্থানীয় লোকজন চলাচলের জন্য সেতুর ভাঙা অংশে সুপারি ও বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করছে।
 
শনিবার (১২ মে) সকালে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর উত্তর দিকে মধ্য বাঁশবাড়িয়া গ্রাম। দক্ষিণ দিকে রয়েছে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রাম। তিন গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ সেতুটির ওপর নির্ভরশীল। মধ্য বাঁশবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক শিশু প্রতিদিন সাঁকো পার হয়ে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করে।

অপরদিকে দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া ও বাদুরা গ্রামের মানুষ সাঁকোটি পার হয়ে জি হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হাট-বাজার, হাসপাতাল ও জেলা সদরে যাতায়াত করে।

দক্ষিণ বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, সেতুটির একাংশ ভেঙে যাওয়ার পর ভ্যানে করে হাট-বাজারে মালামাল ও কৃষিপণ্য নেওয়া যাচ্ছে না। ছয় কিলোমিটার ঘুরে শংকরপাশা গ্রামের এ কে এম এ আউয়াল ফাউন্ডেশনের সামনের সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
জি হায়দার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র মো. নাদিম বলে, সেতুটির একাংশ ভেঙে যাওয়ার পর সেখানে তৈরি সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। সাঁকো পার হতে আমাদের ভয় করে। বর্ষার সময় সাঁকো কাঁদা পানিতে পিচ্ছিল হয়ে যায়। তখন পা পিছলে পড়ে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।

উপজেলার শংকরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল হালিম মৃধা বলেন, সেতুটি মেরামত করতে ছয় লাখ টাকা প্রয়োজন। এলজিইডির সেতু মেরামতের জন্য তহবিল নেই। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেতুটি মেরামতের জন্য চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পিরোজপুর সদর উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সুভাস চন্দ্র মালাকার বলেন, এলজিইডি নতুন কোনো লোহার সেতু নির্মাণ করছে না। পুরাতন লোহার সেতুগুলো মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। এ কারণে সেতুটি মেরামত করা যাচ্ছে না। এখন নতুন করে সেখানে গার্ডার সেতু নির্মাণ করতে হবে।

পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, আমি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) যে বরাদ্দ পাই তা দিয়ে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিতে পারি। তাতে সেতুটির মেরামত হবে না। ওই খালের মোহনায় (সেতুর কাছে) সেতু নির্মাণ না করে একটি জলকপাট নির্মাণ করলে ভালো হয়। এজন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।