ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গণধর্ষণের মামলায় ৪ জন কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
গণধর্ষণের মামলায় ৪ জন কারাগারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন রাব্বি, সজিব ও মনির। ছবি: বাংলানিউজ

ব‌রিশাল: বরিশালের কাশীপুর হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে এক ছাত্রীকে (১৭) গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে।

শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে তাদের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

আদালতে এ ঘটনায় অভিযুক্ত রায়হান মল্লিক রাব্বি (২৬), সাইফুল ইসলাম সজিব (২২) ও মনির শেখ (২৫) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান।

পরে গ্রেফতারকৃতদের সহযোগী নিজাম উদ্দিন ওরফে মিজানসহ (২২) চারজনকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

এর আগে এ ঘটনায় শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ভিকটিমের মা।

ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে মামলায় অভিযুক্ত চারজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সত্যরঞ্জন খাসকেল।

গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে, রায়হান মল্লিক রাব্বি (২৬) ঘটনার মূলহোতা নগরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিএম কলেজের প্রথম গেট সংলগ্ন মল্লিক প্লাজার বাসিন্দা বাবুল মল্লিকের ছেলে।   

বাকীদের মধ্যে বিএম কলেজের প্রথম গেট সংলগ্ন তালভিটা এলাকার ভাড়াটিয়া ইসমাইল শেখের ছেলে মো. মনির শেখকলেজ রো সিকদার ভিলা ছাত্র মেসে বাসিন্দা ও বাকেরগঞ্জের পাদ্রিশিবপুর এলাকার জামান হাওলাদারের ছেলে বিএম কলেজের মার্কেটিং বিভাগের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র সাইফুল ইসলাম সজিব (২২) ও একই মেসের বাসিন্দ বিএম কলেজের তৃতীয়বর্ষের ছাত্র নিজাম উদ্দিন ওরেফে মিজান (২২)। তবে এরমধ্যে মিজানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ না থাকলেও তিনি অপরাধ সংগঠিত করতে সহায়তা করেছেন বলে জানিয়েছেন এসআই সত্যরঞ্জন খাসকেল।

এদিকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডা. শিখা সাহা বাংলানিউজকে জানান, মেয়েটিকে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে মেয়েটিকে সার্জারি (মহিলা) ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। সে অনেকটা শঙ্কামুক্ত হলেও। অতিরিক্ত চেতনানাশক সেবন করানোর ফলে বেশীর ভাগ সময়ে ঘুমে থাকছে। ঘুমের ভাব কেটে গেলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে। তবে মানসিকভাবে সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগবে।

মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার এএম রুহুল আমিন জানিয়েছে, পুলিশের জিঞ্জাসাবাদেও রাব্বীসহ তিনজনেই ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে।

ঘটনার বিবরণে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, ভিকটিমের বন্ধু ইমতিয়াজের মেসে ভিকটিম আসে প্রাকটিক্যাল খাতা নেওয়ার জন্য। সেসময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেফতারকৃত মানিক ভিকটিমের বন্ধুকে মেসে আটকে রাখে এবং ঘটনার মূলহোতা রাব্বী ওই মেয়েটিকে (ভিকটিম) তার ছেলে বন্ধুর মেস থেকে তুলে রিকশায় করে সাইফুলের মেসে নিয়ে যায়। যেখানে প্রথমে রাব্বী পরে সাইফুল ও মানিক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।

তবে এর আগেই ভিকটিম ও ভিকটিমের বন্ধুর কাছ থেকে ৫ হাজার হাজার টাকা ও দু'টি মোবাইল সেট নিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এদের মধ্যে সেখানে তাকে ধর্ষণের পরে রাব্বী ও মানিক ওই ছাত্রীটিকে সাইফুলে মেসে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ছাত্রীর বন্ধুর কাছ থেকে পুলিশ খবর পেয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় ছাত্রীকে উদ্ধার করে।

থানা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া রাব্বীর বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক আটটি মামলা রয়েছে।

এরআগে শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে নগরের কলেজ রো’র  (ভাষা শহীদ অধ্যক্ষ আইউব আলী খান সড়ক) সিকদার ভিলা নামে একটি ছাত্র মেসে অভিযান চালিয়ে অচেতন অবস্থায় ধর্ষণের শিকার কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করে শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।