নাটোর জেলাকে মাদকমুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, মাদক প্রতিরোধে শুধু আইন যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং সমাজের দায়িত্বশীল সব শ্রেণির মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে নাটোর শহরের কানাইখালি মাঠে জেলা প্রশাসন ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত এক মাদক বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি আরো বলেন, দেশের প্রায় ৭০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাদকাসক্ত। তাদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ। যে তারুণ্য স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বে, সমগ্র দেশ যাদের নিয়ে স্বপ্ন দেখে, তারা আজ মাদকাসক্ত হয়ে ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে যাচ্ছে। তাদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে এ দেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু অসাধু কর্মকর্তা। মাদকের
বিস্তার রোধে তাদের গাফিলতির কারণে সৎ কর্মকর্তাদের সমস্ত সাফল্য ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
মাদক জীবন থেকে জীবন কেড়ে নেয়। মাদকাসক্তের কারণে একটি পরিবারের সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি নষ্ট হয়। মাদকসেবী পরিবারের বোঝা হয়ে পরিবারকে ধ্বংস করে এবং দেশের সম্পদ না হয়ে দায় হয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশ মাদক উৎপাদক দেশ না হলেও বিশ্বের মাদকপ্রবণ তিনটি বলয়ের মধ্যে এর অবস্থান। তাই বর্তমান সরকার এরই মধ্যে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে মাদকের চোরাচালান বন্ধে কঠোর ভূমিকা পালন করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের নির্দেশ দিয়েছেন। মাদকের বিরুদ্ধে এখন প্রয়োজন সামাজিক আন্দোলন।
শিক্ষার্থীদের কাছে মাদকের কুফল তুলে ধরার মাধ্যমে মাদকবিরোধী চেতনা ছড়িয়ে দিতে শিক্ষক ও স্থানীয় ইমামদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে এখন প্রয়োজন সামাজিক অঙ্গীকার। পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য রাখতে হবে যেন তাদের সন্তানরা মাদক থেকে দূরে থাকে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শামসুজ্জোহা, নাটোর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক জাফরুল্ল্যাহ কাজল, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আনিসুর রহমান খান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী আকন্দ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নাসিমা বানু লেখা, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর আলমগীর পাশা প্রমুখ।
এতে জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনীতিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ অন্তত আড়াই হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মাদকের অপব্যবহার ও পাচারের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত এ সমাবেশ উপস্থিত সবাই এসময় মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে অবদান রাখার অঙ্গীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
এসআই