সারাদিন শুয়েই দিন কাটছে মুক্তামনির। অনুরোধ রাখতে মাঝে মধ্যে হুইল চেয়ারে করে দাদার কবরের পাশে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।
মুক্তামনির বাবা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাশদাহ ইউনিয়নের দক্ষিণ কামারবায়সা গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, চিকিৎসকরা তো চেষ্টার কম করেননি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী দেখভাল করেছেন। আমরা সত্যি কৃতজ্ঞ। এখনো ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের ডাক্তাররা ফোন করে খোঁজখবর নেন। আমরাও নানা সময়ে দরকার হলে ফোন করি। কিন্তু বর্তমানে তার হাতের অবস্থা আরও খারাপ। ফুলে গিয়ে কস ঝরছে। ড্রেসিং করতে দেরি হলেই হাতে সাদা পোকার জন্ম হচ্ছে। আর দুর্গন্ধ তো আছেই।
ইব্রাহিম হোসেন আরও বলেন, ডাক্তাররা তো সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে আর নতুন করে অপারেশন করার মতো অবস্থাও তার নেই। কোনো বিকল্প চিকিৎসা আছে কি না তাও জানিনা।
কেমন আছো জানতে চাইলে মুক্তামনি এক কথায় বলে, ভাল। হাতের অবস্থা কি? প্রশ্ন করলে- শুধু হাতের দিকে তাকায় সে।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে ‘নয় বছরেও ধরা পড়েনি মুক্তার রোগ’ শিরোনামে বাংলানিউজসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের। প্রথমে স্বাস্থ্য সচিব তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
তাকে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে নেওয়া হয়। সেখানে মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরিক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংস পিণ্ড। এরপর মুক্তামনিকে নিয়ে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি আসার অনুমতি পায় বাবা ইব্রাহিম হোসেন। কিন্তু পরে আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তামনি। বাড়িতেই কোনো মতে চলছে তার চিকিৎসা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
আরএ