ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রেকর্ড গড়ে শপথ নিলেন আবদুল হামিদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
রেকর্ড গড়ে শপথ নিলেন আবদুল হামিদ আবদুল হামিককে শপথ বাক্য পাঠ করাচ্ছেন স্পিকার শিরীন শারমিন। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: প্রথমবারের মতো টানা দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়ে ইতিহাস গড়লেন মো. আবদুল হামিদ।

মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে আবদুল হামিদকে শপথ বাক্য পাঠ করান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ, রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন পেশাজীবী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

শপথ মঞ্চ থেকে নেমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর আরেক কন্যা শেখ রেহানা ও বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ রাষ্ট্রপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা, রাষ্ট্রপতির পত্নী রাশেদা খানমসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।  ছবি: পিআইডিঅন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট, চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু, ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন ভ্যাটিকানের দূত জর্জ কোচেরি, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপপো।

শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণ উপলক্ষে লাল-সবুজ বাতিতে সাজানো হয় পুরো বঙ্গভবন। বঙ্গভবনের ভেতরটা সাজানো হয় নানা রকম ফুল দিয়ে।
 
স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৬ জন ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে আবদুল হামিদই প্রথম যিনি টানা দ্বিতীয় বারের মতো দায়িত্বপালনের জন্য শপথ নিলেন।

সংবিধানে সর্বোচ্চ দুই বার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার সুযোগ থাকায় এটিই হবে আবদুল হামিদের শেষ মেয়াদ। এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন আবদুল হামিদ।

দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে ফেরার পর ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন হয়েছিল। এরপর সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হন।

বঙ্গভবন প্রেস উইং সূত্রে জানা যায়, শপথ অনুষ্ঠানের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নানা রকম ফুল আর রঙিন বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে বঙ্গভবন।

প্রথম মেয়াদে দায়িত্বপালনের পর আবদুল হামিদ বিভিন্ন সময় হাস্যরসে বঙ্গভবনের নিয়ন্ত্রিত জীবন পছন্দ না হওয়ার কথা বলেছেন। এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেছিলেন, জিয়াউর রহমানের আমলে জেলে ছিলাম। এখনও জেলে আছি। পার্থক্য আগে স্যালুট দিতো না, এখন দেয়।

১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মো. আবদুল হামিদ।

ছাত্রজীবনেই সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন আবদুল হামিদ। তিনি সত্তরের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনসহ ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ।

১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১০ জুলাই পর‌্যন্ত সংসদে ডেপুটি স্পিকার এবং এরপর থেকে ২০০১ সালের ২৮ অক্টোবর পর‌্যন্ত স্পিকার হিসেবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ।

২০০৯ সালে গঠিত নবম সংসদেও স্পিকারের দায়িত্বপালন করেন। স্বভাবসুলভ হাস্যরস আর দক্ষতার সঙ্গে সংসদ পরিচালনায় সংসদকে অধিবেশনগুলো সাধারণের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮/আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা
এমইউএম/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।