ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কালভার্ট আছে, রাস্তা নেই!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
কালভার্ট আছে, রাস্তা নেই! দুই পাশে মাটি বা রাস্তা না থাকায় কালভার্টটি ব্যবহার করতে পারছেন না এলাকাবাসী। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: একসময়ে ধলেশ্বরীর বড় শাখা নদী ছিলো এখানে। কিন্তু এখন আর তার কোনো অস্তিত্ব নেই। শাখা নদীর উভয় পাশে চর পড়ে কৃষি জমিতে রূপান্তরিত হয়েছে। আর সেই সঙ্গে ধলেশ্বরীর ওই শাখা নদীটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্ব ইউনিয়নের উত্তর গালা এলাকার ওই খালের ওপর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নির্মাণ করা হয় একটি কালভার্ট। গালা বাজার ধুলট রাস্তার উত্তর গালা জামে মসজিদের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ১৯ লাখ ১১ হাজার ২০৪ টাকা ব্যয় করে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়।

নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরেও তা সাধারণ মানুষের কোনো কাজে না এসে উল্টো ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে। কালভার্টের দু’পাশে উঠা-নামার ক্ষেত্রে মাটি না থাকায় কোনো ধরনের যানবাহন তো দূরের কথা সাধারণ মানুষের হেঁটে চলাচল করাও বেশ ভোগান্তির ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালভার্টটি ব্যবহার করতে না পেরে এলাকার গৃহবধূরা লাকরি শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন।  ছবি: বাংলানিউজ
উত্তর গালা এলাকার হযরত আলী (৫৫) বাংলানিউজকে বলেন, কালভার্টটি নির্মাণ হওয়ার পর যোগাযোগ ব্যবস্থার বেশ উন্নয়ন হবে বলে এমন ধারণা ছিলো। কালভার্টের ওই পাশেই জামে মসজিদ। নামাজের জন্য মুসল্লিদের যাতায়াত অনেক কষ্টের হতো। কাজেই কালভার্টটি নির্মাণ হওয়ায় বেশ আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু এটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার দুই বছর সময় পার হয়ে গেলেও দুই পারে মাটি বা রাস্তা না থাকায় কালভার্টেটি সাধারণ মানুষের কোনো কাজেই আসছে না।

একই এলাকার আবুল হোসেন (৩৫) বাংলানিউজকে বলেন, উত্তর গালা এলাকার বেশির ভাগ মানুষের কৃষি জমি কালভার্টের ওই পারে। কৃষি জমিতে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম এই কালভার্টটি। কিন্তু সেতুর দু’পাশে কোনো মাটি না থাকার কারণে রিকশা, ভ্যান বা অন্য কোনো যানবাহন চলাচলের উপায় নেই।  

কালভার্টটির দু’পাশে মাটি ভরাট ও রাস্তা নির্মাণের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণের দাবি জানান তিনি।

রুবিয়া নামের এক গৃহবধূ জানান, কালভার্টের ওপর দিয়ে মানুষের চলাফেরা করাটা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বেশির ভাগ মানুষ কালভার্টের নিচ দিয়ে চলাচল করে। তাই কালভার্টের ওপর লাকরি (জ্বালানি) বা অন্য কিছু শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এটির উভয় পাশে মাটি ভরাট করে রাস্তা নির্মান করলে স্থানীয়দের খুবই উপকার হবে।

জানতে চাইলে ধামশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান তুলা বাংলানিউজকে বলেন, কালভার্টের পাশে মাটি ফেলার জন্য আশেপাশের জমির মাটি দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করার কারণে মাটি ফেলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামীতে কোনো প্রকল্প পেলে অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমা বাংলানিউজকে বলেন, কালভার্টের রাস্তা ও মাটি ভরাটের জন্য সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা এলাকার অন্য কেউ আবেদন করলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮ 
কেএসএইচ/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।