ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ইকোসক আয়োজিত ‘উন্নয়নে অর্থায়ন (এফএফডি)’ বিষয়ক তৃতীয় ফোরামে বক্তব্য রাখছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত

ঢাকা: স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ উল্লেখ করে এ বিষয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

তিনি বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সাবলীল উত্তরণ নিশ্চিত করতে এবং উন্নয়ন ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তরিত দেশগুলোর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়াবে বলে প্রত্যাশা  ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

সোমবার (২৩ এপ্রিল) জাতিসংঘ সদর দফতরে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ (ইকোসক) আয়োজিত ‘উন্নয়নে অর্থায়ন (এফএফডি)’ বিষয়ক তৃতীয় ফোরামে কান্ট্রি স্টেটেমেন্ট তার বক্তব্যে এ আহ্বান জানান মন্ত্রী।  

বক্তব্যের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার যে অগ্রগতি সাধন করেছে এবং যে সব নীতিমালা গ্রহণ করেছে তা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ ২০১৫ সালে বিশ্ব ব্যাংক কাছ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ তিনি বলেন-শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যানিটেশন সুবিধাসহ জনগণের জীবনের অন্যান্য মৌলিক অবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ সামাজিকভাবে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিগত বছরগুলোতে জিডিপি ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশের উপরে রয়েছে। এখন আমাদের জিডিপির গড় ৭ শতাংশেরও বেশি। এর ফলে ২০০৫ সালের দারিদ্র্যসীমা ৪০ শতাংশ থেকে ২০১৬ সালে ২৩ শতাংশে এবং অতি দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ এ বছর প্রথমবারের মতো স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং এক্ষেত্রে তিনটি নির্দিষ্ট ধাপে কাঙ্খিত মানদণ্ডের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবধান নিয়ে এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। যেখানে নারী, বয়স্ক ও শারিরীকভাবে অক্ষমদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ থেকে বাদ পড়ছেন না দেশের শেষ প্রান্তে থাকা মানুষটিও। নারী ও শিশু সংবেদনশীল বাজেটও প্রণয়ন করে যাচ্ছে সরকার।

দেশের বেসরকারি খাতের সামর্থ্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং ১২ টি হাই-টেক পার্ক স্থাপনসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে”।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ট্রাস্ট ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। বাজেটে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিতে ২০১৪ সালে প্রণয়ন করা হয়েছে জলবায়ু সংক্রান্ত আর্থিক কাঠামো (Climate Fiscal Framework)।

রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকেরা আমাদের উন্নয়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নিজভূমিতে তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে তিনি ‘আদ্দিস আবাবা অ্যাকশান অ্যাজেন্ডার পূর্ণ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান। এ ছাড়া এসডিজি’র সফল বাস্তবায়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উত্তম সহায়তা দানের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও অর্থায়ন ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে, যার জন্য অবশ্যই রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন বলে দৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেন অর্থমন্ত্রী।

এফএফডি’র চলতি কর্মসূচি আগামী ২৬ এপ্রিল শেষ হবে। এফএফডি’র এ তৃতীয় ফোরামে বাংলাদেশ ডেলিগেশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।