ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আসছে বর্ষায় মিরপুরে মহাবিপদ সংকেত!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
আসছে বর্ষায় মিরপুরে মহাবিপদ সংকেত! সড়কে জলাবদ্ধতা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর ঘণবসতিপূর্ণ এলাকা মিরপুর। তুলনামূলক নিচু এলাকা হওয়ায় বৃষ্টি হলেই চরম দুর্ভোগে পড়েন স্থানীয়রা। গেল বর্ষায় মিরপুরের কাজীপাড়া, শেওরাপাড়া, কালশী, মিরপুর-১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর এলাকায় নৌকা চলাচলের মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছিল।

অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় মিরপুরে জলাবদ্ধতার প্রকোপ বেশি। গত বছর মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতেই মিরপুরবাসীকে পানিতে ডুবতে হয়েছে।

গত বছরের তীব্র ভোগান্তির অভিজ্ঞতা নিয়ে মিরপুরবাসী ধারণা করেছিলেন আসছে বর্ষার আগামী বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে তৎপর হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

মিরপুরের পানি গড়ায় সাধারণত কালশী খাল দিয়ে। এই খালে যাওয়ার আগে যেসব ড্রেনেজ ব্যবস্থা তার অধিকাংশই অকেজো প্রায়। ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কারের কাজ এখনো শুরু হয়নি। এরইমধ্যে বর্ষার আগাম বার্তা শুরু হয়ে গেছে। কয়েক দফা বৃষ্টিও হয়েছে।

তাই এবার মিরপুরবাসীর জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে, একথা স্বীকার করছেন খোদ সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মকর্তাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা রসিকতা করে পরামর্শ দিয়েছেন, মিরপুরে যাদের বাসা তারা লাইফ জ্যাকেট কিনে রাখতে পারেন।

জলাবদ্ধতা নিয়ে নগরপরিকল্পনাবিদ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বৃষ্টি হলে আবারও ঢাকা ডুববে কোনো সন্দেহ নাই। পানি যাবে কোথায়? ড্রেন আছে? কাজ করেছে? করে নাই। তাই সহজ হিসাব বৃষ্টি হলে পানিতে সাঁতার কাটতে হবে।


তিনি বলেন, রাস্তার পানিতে জলাবদ্ধতা হয় না, জলাবদ্ধতা হয় বাসাবাড়ির পানিতে। কাজেই যতদিন বাসার ছাঁদের পানি বাড়ি মালিকের নিয়ন্ত্রণে না আসবে ততদিন জলাবদ্ধতা থাকবেই। এজন্য রেইন হারভেস্টিং পদ্ধতি চালু করতে হবে।

এবারের বর্ষায় ঢাকা ওয়াসার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে সংস্থার ড্রেনেজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সবেমাত্র কাজ শুরু করছি। আরও দেড়, দুই মাস লাগবে এর ফল পেতে।

বর্ষা তো শুরু তাহলে কি এবারও পানিতে হাবুডুবু খাবে মিরপুরবাসী? এমন প্রশ্ন করলে ওই কর্মকর্তা বলেন, মিডিয়ার সাথে আমার কথা বলার এখতিয়ার নাই। আমি কিছুই বলতে পারবো না।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক কমোডর আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, ‌‌‌‌গেল বর্ষার পর আমাদের ২১৯ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কার করার চাহিদা ছিল। আমরা প্রকল্পও প্রস্তুত করেছি কিন্তু অর্থায়ন না হওয়ায় কাজ শুরু করতে পারিনি। বর্ষার আগে কতটুক করতে পারবো বলা মুশকিল!

তিনি বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মিরপুর-১২ থেকে বিজয় সরণি পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের ড্রেনেজ ব্যবস্থাই ভেঙে পড়েছে। এখানে কাজ করারও সুযোগ নেই।

এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে মিরপুরের অধিকাংশ ড্রেনই আবর্জনায় ভরে গেছে। সাংবাদিক আবাসিক এলাকার পাশের খালের ভেতর দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারে। খাল পুরটাই ভরাট হয়ে গেছে আবর্জনায়।

কাজেই এবার ভারি বৃষ্টি লাগবে না, মাঝারি মাত্রার বৃষ্টি হলেই মিরপুরবাসীর জন্য বিপদ। এবার জলাবদ্ধতা হলে কত সময়ে তা নামবে সেই হিসাব নাই সেবা সংস্থার কাছেও। তাই এবারের বর্ষা মিরপুরবাসীর জন্য মহাবিপদ সংকেত!

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।