ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কোনাবাড়ী পল্লী বিদ্যুতের সেই লাইনম্যান সাময়িক বরখাস্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৮
কোনাবাড়ী পল্লী বিদ্যুতের সেই লাইনম্যান সাময়িক বরখাস্ত গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি

গাজীপুর: গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কোনাবাড়ী জোনাল অফিসের ঘুষগ্রহীতা লাইনম্যান জয়নাল আবেদীনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কোনাবাড়ী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলানিউজকে।

জয়নালের বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে উল্টো গ্রাহককে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে গত ১৮ এপ্রিল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ‘কোনাবাড়ীতে ঘুষ নিয়ে উল্টো প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মহলের নজরে এলে শনিবার (২১ এপ্রিল) সকালে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ বিষয়ে কোনাবাড়ী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. শিহাব হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, লাইনম্যান জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে অনলাইনপোর্টালে নিউজ হয়। প্রাথমিকভাবে এর সত্যতা পাওয়া যায়। তাই অনিয়মের অভিযোগ এনে জয়নালকে সাময়িক বরখাস্ত করেন পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

আর লাইনম্যান জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, টাকা নিয়েছিলাম কিন্তু তা আবার ফেরত দিয়েছি। ৩-৪ দিন আগে অনলাইনপোর্টালে আমার বিরুদ্ধে নিউজ আসে। শনিবার (২১ এপ্রিল) সকালে আমাকের সাময়িক বরখাস্তের পত্র দেওয়া হয়।  

জয়নালের ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জরুন এলাকার বিদ্যুৎ লাইনের একটি ট্রান্সফরমার কয়েক দিন আগে নষ্ট হয়ে যায়। এলাকার গ্রাহকরা তখন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কোনাবাড়ী জোনাল অফিসে জানায়। অফিসের লাইনম্যান রানা প্রতাপ ও জয়নাল মিয়া গ্রাহকদের কাছ থেকে অবৈধভাবে ১৪ হাজার টাকা নিয়ে একটি ১৫ কেবি’র ট্রান্সফরমার লাগিয়ে দেন। সেই ট্রান্সফরমার ফের নষ্ট হয়ে যায়। গ্রাহকরা আবার কোনাবাড়ী জোনাল অফিসে অভিযোগ জানান।  

এই অভিযোগের পর রানা ও জয়নাল ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রাহকদের জানান, ট্রান্সফরমারে লোড নেই। এখানে ৫০ কেবি’র ট্রান্সফরমার লাগাতে হবে। এজন্য গ্রাহকদের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন দু’জন। ‘আশ্বাসে’ এলাকার বাসিন্দা ফরিদ মিয়াসহ ৬-৭ জন গ্রাহক রানা ও জয়নাল মিয়াকে গত ১৪ এপ্রিল ৩০ হাজার টাকা দেন। কাজ শেষে বাকি ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও বলেন তারা।  

ফরিদ মিয়া অভিযোগ করেন, টাকা দেওয়ার পরও ৪-৫ দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় গত ১৭ এপ্রিল বিকেলে জয়নাল মিয়াকে মোবাইলে ফোন করেন তিনি। জয়নাল টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও বলেন, ‘কাজ করে দিতে পারবো না বলে টাকা অন্য একজনের কাছে দিয়েছি। আপনারা তার কাছ থেকে নিয়ে নেন। ’ তখন জয়নালকে ফরিদ বলেন, ‘আপনাকে টাকা দিয়েছি, আপনি টাকা ফেরত দেবেন’।  

এক পর্যায়ে জয়নাল ফোন কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর ফের ফরিদ মিয়াকে কল করে হুমকি দেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে জানে মেরে ফেলবো। আমাকে চিনিস? তোর কোন বাপ আছে আমার সামনে নিয়ে আয়। ’

ফরিদ মিয়া তখন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা মূর্খ মানুষ, না বুঝে তাদের টাকা দিয়েছি। ভেবেছি তারা পল্লী বিদ্যুতের লোক। এখন উল্টো টাকার জন্য আমাকেই মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি আইনের আশ্রয় নেবো। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৮
আরএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।