শুক্রবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় রানা প্লাজার সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির পক্ষ থেকে ‘মৃতদের স্মরণ করো জীবিতদের জন্য লড়াই করো’ স্লোগানে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রদর্শনীটির পরিকল্পনা ও কিউরেটিং করেছেন যৌথভাবে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখ্তার ও মার্কিন অ্যাক্টিভিস্ট, ইতিহাসবিদ এবং কাঁথাশিল্পী রবিন বারসন।
প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন রানা প্লাজা ধসে নিখোঁজ সমাপ্তি রাণীর মা ও আহত শ্রমিক রুনা রাণী দাস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখ্তার, নিহত রাব্বীর মা রাহেলা খাতুন, নিখোঁজ শান্তার বোন সেলিনা আক্তার, নিখোঁজ বিউটির স্বামী আলম মাতবর, আহত শ্রমিক রুপালী ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুর ইসলাম শামা ও গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির দপ্তর সম্পাদক মুসা কলিমুল্লাহ। লিখিত শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান শিল্পী রবিন বারসন।
বক্তারা বলেন, নিহতদের নিয়ে এই ছবি স্মৃতি কাঁথা প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য হলো ২৪ এপ্রিল ও হাজারো প্রাণ-স্বপ্ন হত্যার কথা যাতে আমরা ভুলে না যাই তার আহ্বান।
বক্তারা আরো বলেন, সারা দুনিয়ার কারখানার ইতিহাসে এই ঘটনা বিরল হলেও এখন পর্যন্ত শাস্তি হয়নি সোহেল রানাসহ দোষীদের। তাই এই স্মৃতি কাঁথা প্রদর্শনীর মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণের আইন বদল এবং রানা প্লাজা- তাজরীনের পুনরাবৃত্তি বন্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানাই।
মোট ১৫টি নিহত নিখোঁজ পরিরবারের নারী সদস্যরা প্রদর্শনীর কাজে অংশ নিয়েছেন। এরা হলেন নিহত সান্ত্বনার বড় বোন সেলিনা আক্তার, নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা খাতুন, নিখোঁজ সমাপ্তি রাণী দাস ও নির্মলা রাণী দাসের আত্মীয় আহত শ্রমিক সুমিত্রা রাণী, নিখোঁজ বিউটি বেগমের মেয়ে ফারজানা, নিহত শিরীন বেগমের মেয়ে মুক্তা, নিহত ইসরাফিলের স্ত্রী চায়না বেগম, নিহত সনজিৎ দাসের মা শূন্যবালা দাস, নিহত পলি আক্তারের মা শাহানা, নিহত খালেদার মা আয়েশা, নিহত মো. শহীদুলের স্ত্রী খাদিজা, নিহত আঁখি আক্তারের মা নাছিমা। এছাড়া অন্যান্য শ্রমিক পরিবার এবং আহত নারী শ্রমিকরাও প্রদর্শনীর কাজে অংশ নিয়েছেন।
মার্কিন কাঁথাশিল্পী রবিন বারসন ২০১১ সালে নিউইয়র্ক শহরের ট্রায়াঙ্গাল সোয়েটার কারখানার ১০০ বছর পূর্তিতে ওই ঘটনায় নিহতদের ছবি সংগ্রহ করে তাই দিয়ে শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে কাঁথা তৈরি করে প্রদর্শনী করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে রানা প্লাজা ও তাজরীনের নিহতদের নিয়ে স্মৃতি কাঁথা তৈরি করেন ২০১৪ সালে। সংগঠক ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখ্তার দীর্ঘ ১০ বছর ধরে গার্মেন্ট শ্রমিকদের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন শ্রমিক আন্দোলনের সংগঠক হিসাবে। আর ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে শ্রমিকদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে ছবি তুলছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
এসএইচএন/এমজেএফ