এ সমস্যা দেখা দেওয়ার পর থেকেই কৃষক ভুলু জমিতে নিয়মিত ওষুধ প্রয়োগ করলেও ধানের কোনো উন্নতি চোখে পড়ছে না। একই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অন্য জমির ধান গাছ গুলো।
বগুড়ার ১২টি উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে লাগানো বিভিন্ন জাতের ধানের জমিতে কম বেশি এসব রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী এ পর্যন্ত ৩০ হেক্টর জমির ধান গাছ এ দু’টো রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে দ্রুত আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে আক্রান্ত জমির পরিমাণ আরও বাড়বে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দূর থেকে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে শুধুই সবুজের সমারোহ। কিন্তু খেতের কাছাকাছি গেলেই ধান গাছের বাস্তব চিত্র চোখে ধরা দেয়। খেতের পর খেত ধান গাছের শীষ লালচে বর্ণ ধারণ করেছে। শীষ শক্ত হয়ে হেলে পড়ছে।
গত দুই দিন শাহজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, ধুনট ও শেরপুর উপজেলা ঘুরে সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান, মিজানুর রহমান, জিল্লুর রহমান, আসাদুজ্জামান রুবেলসহ একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে চলতি মৌসুমের বোরো ধান চাষ সম্পর্কে এমন এসব তথ্য জানা যায়।
ভুক্তভোগী কৃষকরা বাংলানিউজকে জানান, ওষুধ দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। ভয়ে অনেক কৃষক ভালো ধান খেতেও আগাম সতর্কতা হিসেবে ওষুধ প্রয়োগ করছেন। কিন্তু কোন ভাবেই খেতের ফসল ভালো করতে পারছেন না তারা। এ রোগে ধান নয় যেন কপাল পুড়ছে বোরো চাষিদের-যোগ করেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় ১ লাখ ৮৯ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। এরমধ্যে ব্রি ধান ২৮, ২৯, জিরা ও কিছু হাইব্রিড জাতের ধান রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, দিনের বেলায় বাড়তি তাপমাত্রা থাকছে। রাতে গিয়ে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। তাপমাত্রার সমন্বয় না থাকায় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের রোগ দমনে নানা ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে লাটিপো ও টুপার নামে দু’টো ওষুধ মাত্রা অনুযায়ী প্রয়োগ করতে বলা হচ্ছে। এ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা পুরো জেলায় মাঠে রয়েছেন।
ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, ধানে দুধ এসেছে কিন্তু গাছে নেক ব্লাস্টে আক্রান্ত হওয়ায় তা ওষুধ প্রয়োগেও তেমন একটা ফল পাওয়া যাবে না।
তবে দানা শক্ত হলে ক্ষতি সীমিত হবে। কিন্তু ধান কাটা ও মাড়াই ছাড়া ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব না বলেও জানান কৃষি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৮
এমবিএইচ/জেআইএম/আরআইএস/