ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আটক জেএমবির ৬ নারী সদস্যের ৫ জনই কলেজ ছাত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
আটক জেএমবির ৬ নারী সদস্যের ৫ জনই কলেজ ছাত্রী গোদাগাড়ীতে পুলিশের হাতে আটক জেএমবির নারী সদস্যরা/ ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পুলিশের হাতে আটক জেএমবির ছয় নারী সদস্যের পাঁচজনই কলেজ ছাত্রী। অন্য দুই জন স্বামী-স্ত্রী। এরা সবাই মিলে বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গি হামলার ছক করতো। আগে আটক দুই জনের তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার (১৮ এপ্রিল) ভোরে উপজেলার ছয়ঘাটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বাকিদের আটক করে। 

আটকের পর বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এক এক করে আটক ছয় নারীসহ সাত জেএমবি সদস্যের পরিচয় নিশ্চিত করেন রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ্।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ্ বলেন, বুধবার ভোরে গোদাগাড়ী উপজেলার ছয়ঘাটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে মোট সাত জঙ্গি সদস্যকে আটক করা হয়।

এর মধ্যে একজন হলেন হাসান আলী (৫০)। তিনি গত বছরের ১১ মে গোদাগাড়ীর বেনীপুরে জঙ্গি হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আটক অপর ছয়জনের মধ্যে রয়েছেন হাসানের স্ত্রী শেফালি বেগম (৪৮), তার দুই মেয়ে মারিয়া খাতুন কনা (২২) ও হানুফা খাতুন (২১), হাসানের ভাই রেজাউল করিমের তিন মেয়ে ফারজানা আক্তার সুইটি (২২), নাদিয়া সুলতানা তিশা (২১) ও রোজিনা সুলতানা কলিকে (২০) আটক করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর পুলিশ সুপার আরও বলেন, আটক হাসান আলীর দুই মেয়ে এবং তার ভাই রেজাউল করিমের তিন মেয়ে সবাই বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী।  

আটকদের মধ্যে মারিয়া খাতুন কনা রাজশাহীর গোদাগাড়ী প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, হানুফা খাতুন রাজশাহী মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, ফারজানা আক্তার সুইটি প্রেমতীল ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, নাদিয়া সুলতানা তিশা রাজশাহী সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং রোজিনা সুলতানা কলি প্রেমতলী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।

তারা বাবা-চাচা মিলে বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি হামলার ছক করতো। বিভিন্ন স্থানে মিলিত হয়ে তারা গোপন বৈঠক করতো, বিতরণ করতো লিফলেট। তাদের সঙ্গে আরও এক জঙ্গি জড়িত রয়েছে। এরই মধ্যে তার পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে আটক করা সম্ভব না হলেও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যে কোনো সময় সেও পুলিশের জালে ধরা পড়বে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ্ বলেন, গত পহেলা বৈশাখের (১৪ এপ্রিল) দিন বিকেলে গোদাগাড়ী এলাকায় বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান বিরোধী লিফলেট বিতরণ করছিলেন দুজন বোরকা পড়া নারী। লিফলেট বিতরণের সূত্র ধরে গোয়েন্দা পুলিশ প্রথমে ওই দুই নারীকে আটক করে। পরে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে আরও পাঁচজনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ছয়জন নারীর পাঁচজনই কলেজ ছাত্রী। আর তারা যে ফাউন্ডেশনের নামে লিফলেট বিলি করেছে সেটার কোনো অস্তিত্ব নেই।

তাদের বিরুদ্ধে বর্তমানে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক খান, বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এসএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।