যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র (Theresa May) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘সরকার প্রধানদের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ ব্যবসায়ী নেতাদের গোলটেবিল বৈঠকের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বুধবার (১৮ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে লন্ডনে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে স্থানীয় সময় বিকেলে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে উপস্থিত বিশ্ব ব্যবসায়ী নেতাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের জন্য এশিয়ার সবচেয়ে আদর্শ অঞ্চল বাংলাদেশে বিনিয়োগে আমার সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
তিনি বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত এসআইডিএস (স্মল আইল্যান্ড ডেভেলপিং স্টেইট), এলএলডিসি (ল্যান্ড লকড ডেভেলপিং স্টেইট), আফ্রিকান এবং ক্যারিবিয়ান দেশগুলোতে বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়ানোর বিপুল সম্ভবনা দেখছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৯ কোটি মধ্যবিত্ত ভোক্তা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জাপানের বাজারে শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত বাজার সুবিধা নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে এশিয়ার সবচেয়ে ভালো ‘বিনিয়োগ হাব’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করছে।
টেকসই শিল্প বিনিয়োগে সরকার তেল, গ্যাসসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সব অর্থনৈতিক কার্যক্রমে আমরা অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিলো ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, যেটি ২০১৫ সালে কমে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসে।
বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নে আমাদের সরকারের নেয়া নীতি ও কর্মসূচি বেশ ফল দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রফতানি কেন্দ্রিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন করছে।
গত মাসে তিন শর্তের মধ্যে সব কয়টি পূরণ করে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার সফলতার কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় দেশি ও বিদেশি এবং বিভিন্ন সংস্থাগুলোর থেকে আসা বেসরকারি অংশীদারিত্ব গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ এবং সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ সেন্টারের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এর ফলে কর্মসংস্থানের আরো সুযোগ সৃষ্টি ও দক্ষ উন্নয়ন কার্যক্রম এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন করবে।
দেশের উন্নয়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বহুমুখী অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এসএমই সেক্টর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনের চালিকা শক্তি। বিপুল সম্ভবনাময় এ সেক্টরকে সহযোগিতা করছে সরকার।
তিনি বলেন, অর্থ, অবকাঠামো উন্নয়ন, সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, কাঁচামাল, ভবিষ্যতের উদ্যোক্তাদের তথ্যভিত্তিক বাজার সুবিধার মতো কিছু মূল বিষয়ের দিকে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা জামানতে এক অংকের সুদে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, নারীদের ঋণ দিচ্ছে, মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকার ই-কর্মাসের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, অর্থ প্রাপ্তির সুবিধা প্রদান, অবকাঠামো উন্নয়ন, সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, কাঁচামাল, ভবিষ্যতের উদ্যোক্তাদের তথ্য ভিত্তিক বাজার সুবিধার মতো কিছু মূল বিষয়ের দিকে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা জামানতে এক অংকের সুদে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, নারীদের ঋণ দিচ্ছে, মান সম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সরকার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ই-কর্মাসের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানান প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি মডেল হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃত।
অর্থনৈতিক সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এসএমই সেক্টরের ওপর ভরষার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্যই আমাদের সরকার এই সেক্টরের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে।
সদস্য দেশগুলোর টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে কমনওয়েলথ এর সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কমনওয়েলথ সরকার ও বেসরকারি খাতগুলোকে সহায়তা করতে পারে।
এছাড়াও সংঘাত বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়তে বিশ্ব নেতাদের কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরের দ্বিতীয় দিনে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন শেখ হাসিনা।
** স্থিতিশীল এশিয়া গঠনে সেতুবন্ধন দৃঢ় করার আহ্বান
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এমইউএম/এসএইচ