ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পা হারালেও মনোবল হারাননি জবি ছাত্রী রুবিনা 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
পা হারালেও মনোবল হারাননি জবি ছাত্রী রুবিনা  হাতে নোট নিয়ে শুয়ে পড়ছেন রুবিনা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ট্রেনে কাটা পড়ে দুই পা হারিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী রুবিনা আক্তার। তবে মনোবল ভাঙেনি তার। সামনে পরীক্ষা তাই শত কষ্ট আর হতাশাকে গ্রাহ্য না করে হাসপাতালের বিছানাতেই চলছে তার পরীক্ষা প্রস্তুতি। 

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুরাতন ভবনের কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতে নোট নিয়ে শুয়ে-বসে পড়ছেন রুবিনা।  

এ সময় বাংলানিউজকে তিনি বলেন, দুই মাসের বেশি হতে চললো আমি হাসপাতালের বিছানায়, ক্ষত জায়গাগুলো প্রায় শুকিয়ে গেছে।

কিন্তু মনের ক্ষত শুকাতে চায় না।  

‘এরপরও আমার শিক্ষক, সহপাঠী ও দেশবাসী সবার  দোয়ায় নতুন করে স্বপ্ন দেখছি। দুই পা হারিয়েও আমি ভালো আছি। ’ 

আলাপচারিতায় তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে রেলমন্ত্রী আমার সব ধরনের চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছেন। কৃত্রিম পা সংযোজনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। তাদের দোয়া সহযোগিতা না থাকলে মনে হয় আমি সুস্থ হতাম না। আবারও স্বপ্ন দেখতে পারতাম না।  

মঙ্গলবার সকালে ঢামেক হাসপাতাল থেকে রুবিনাকে ঢাকা সেনানিবাসের সম্মিলিত সামরিক  হাসপাতালে (সিএমএইচ)  নেওয়া হয়। ওখানে তার পায়ের কিছু ব্যয়াম দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃত্রিম পা সংযোজনের বিষয়েও কথা হয়েছে।

জবির সমাজকর্ম বিভাগের ছাত্রী রুবিনা জানান, মে মাসে শেষ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষা। পরীক্ষার জন্য পড়াশনা করছি। আমাকে ভালো ফলাফল করতে হবে।  
হাতে নোট নিয়ে বসে পড়ছেন রুবিনা।  ছবি: বাংলানিউজ
‘আমার শিক্ষকরাও উৎসাহ দিয়ে বলেছেন, পরীক্ষায় যাতে অংশ নিতে পারি সেজন্য সব ব্যবস্থা করে দেবেন তারা। ’ 

সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রুবিনা বলেন, সবাই আমার পাশে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, তাতে দুই পা হারিয়েও আমার মনবল ভাঙেনি। আমি এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছি।  

‘পড়াশোনা শেষ করে আমি সরকারি চাকরি করতে চাই, মানুষের সেবা করতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। ’ 

গত জানুয়ারিতে কমলাপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিনে কাটা পড়ে দুই পা হারান জবি ছাত্রী রুবিনা। ওইদিন বেলা দেড়টার দিকে রেললাইন পার হয়ে স্টেশনের ৪ থেকে হেঁটে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার সময় ট্রেনের ইঞ্জিনে কাটা পড়েন তিনি।  

এরপর থেকেই হাসপাতালে রয়েছেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের মৃত রবিউল ইসলামের মেয়ে রুবিনা।  

রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় একটি মেসে থেকে পড়াশোনা করছেন তিনি। ওইদিন গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ে যাওয়ার জন্য কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৮
এজেডএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।