মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস।
প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, আমিসহ কয়েকজন চিকিৎসক মিলে রাজীবের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি।
রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম জানান, ঢামেক হাসপাতালে সব প্রক্রিয়া শেষে নামাজে জানাজার জন্য হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে রাজীবের মরদেহ। সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জানাজা শেষে তার মরদেহ গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।
এসময় ঢামেক হাসপাতালে রাজীবের দুই ছোট ভাই মেহেদি হাসান ও আব্দুল্লাহসহ বেশ ক'জন আত্মীয়-স্বজন উপস্থিত ছিলেন।
গত ৩ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে বিআরটিসি বাসের সঙ্গে স্বজন পরিবহনের বাস টক্কর দিতে গেলে বাস দু’টির চিপায় পড়ে ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাজীবের। সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের এ ছাত্রকে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরদিন ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। সেখানে সরকারের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। চিসিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে আইসিইউর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামের রাজীব তৃতীয় শ্রেণিতে থাকাকালে মাকে এবং অষ্টম শ্রেণিতে থাকাকালে বাবাকে হারান। এরপর মতিঝিলে খালা জাহানারা বেগমের বাসায় থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। মহাখালীর তিতুমীর কলেজে স্নাতকে ভর্তি হওয়ার পর যাত্রাবাড়ীতে মেসে ভাড়ায় থেকে পড়াশোনা করছিলেন রাজীব। এর পাশাপাশি তিনি একটি কম্পিউটারের দোকানেও কাজ করছিলেন। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট দুই ভাইয়ের খরচও চালাতে হতো রাজীবকে।
রাজীবের হাত বিছিন্ন করে ফেলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ এপ্রিল বিআরটিসি বাসের চালক ওয়াহিদ (৩৫) ও স্বজন বাসের চালক খোরশেদকে (৫০) গ্রেফতার করা হয়। ৫ এপ্রিল দু’জনকে আদালতে তোলা হলে তাদের দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। ৮ এপ্রিল দু’জনকে পাঠানো হয় কারাগারে। সোমবার দুই আসামির পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হলেও নামঞ্জুর করেন আদালত।
** জীবনহানি হলেও রাজীবের ক্ষতিপূরণের রিট মামলা চালাবো
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৮
এজেডএস/ওএইচ/জেএম