বাংলা বছরের শেষ এই দিনটিতে পুরোনো বছরকে বিদায় জানানো হয় বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে। এ দিনে বিভিন্ন ধরনের লোকাচারমূলক অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
রোববার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে প্রতিবছরের মতো এবারো ঢাকার ধামরাইয়ে চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে চড়ক পূজার আয়োজন করা হয়। চড়ক পূজা আবহমান গ্রাম-বাংলার এক উৎসব। এখনো এ উৎসবে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের ঢল নামে।
চৈত্র সংক্রান্তির প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে চড়ক। এ পূজার জন্য আগের দিন চড়ক গাছটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে রাখা হয়। ২৫-৩০ ফুট উঁচু বৈদ্যুতিক খুঁটির মতো সোজা একটি বৃক্ষকে বলা হয় ‘চড়ক গাছ’। বিশেষত কদম গাছের মূল কাণ্ড দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। সারা বছর গাছটি জলে ডুবানো থাকে। চৈত্র সংক্রান্তির দিনে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে গাছটি উঠানো হয়। এরপর বারোয়ারি তলায় বা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় চড়ক পূজা। মূল সন্যাসী পূজার পৌরহিত করেন। বিকেলের দিকে চড়ক গাছটি সোজা করে মাটিতে পুঁতে দেয়া হয় এবং গাছের আগায় বেঁধে দেয়া হয় কাঠ। সন্যাস গ্রহণ করা এক সন্যাসী স্নান করে নতুন ধুতি পরে মূল সন্যাসীর কাছে মন্ত্র নেন। মন্ত্র শেষ হলে তাকে পিঠে লোহার বড়শি গেঁথে দেয়া হয়। এরপর সে অবস্থায় তাকে চড়ক গাছে বেঁধে রাখা কাঠের এক প্রান্তে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে সাতবার ঘুরিয়ে তাকে নিচে নামিয়ে আনা হয়।
ধামরাই উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বাংলানিউজকে জানান, চৈত্রের শেষ দিনে যেমন নানা আয়োজনে বর্ষকে বিদায় জানানো হয়, তেমনি বৈশাখ বন্দনায় মেতে ওঠে বাঙালি। চড়ক পূজা মূলত সনাতনী সম্প্রদায়ের উৎসব হলেও চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক বাঙালির কাছে চৈত্র সংক্রান্তি এক বৃহত্তর লোক উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৮
এনটি