ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফাঁকা যাচ্ছে ৬০ ও ১০০ টাকা ভাড়ার ‘গ্রিন ঢাকা’ বাস!

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৮
ফাঁকা যাচ্ছে ৬০ ও ১০০ টাকা ভাড়ার ‘গ্রিন ঢাকা’ বাস! ‘গ্রিন ঢাকা’

ঢাকা: দেশের কোনো রুটে এসি (শীতাতপ) বাসের ভাড়া সরকার নির্ধারণ করে না। দূরপাল্লার রুট প্রতিযোগিতামূলক হওয়ায় এসি বাসের ভাড়া তেমন বাড়াতে পারেন না মালিকরা। কিন্তু ঢাকার ভেতরে এসি বাসের স্বল্পতাকে পুঁজি করে ‘অস্বাভাবিক’ চড়া ভাড়ায় বাস নামিয়েছে ‘গ্রিন ঢাকা’ নামে একটি কোম্পানি। বেশি ভাড়া নেয়ার পেছনে ১৫ শতাশ ভ্যাটকে দায়ি করেছেন গ্রিন ঢাকা বাসের মালিকপক্ষ।

গত ৬ এপ্রিল উত্তরা থেকে মতিঝিলে চলা শুরু করে গ্রিন ঢাকা এসি বাস। প্রথম ধাপে ৫০ সিটের ২০টি বাস নামানো হয়েছে।

সব মিলিয়ে ৪০টি বাস নামাবে তারা। কিন্তু সর্বনিম্ন ৬০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০০ টাকা এই দুই টিকিটে ভাড়া নেয়ার অভিযোগ জানাচ্ছেন যাত্রীরা।

সোমবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় গ্রিন ঢাকার মতিঝিলগামী একটি বাস বসুন্ধরা গেটের পাশে এসে দাঁড়ায়। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় যাত্রী মাত্র ১১ জন। বাকি ৩৯ আসনই ফাঁকা।

বাসচালক জানান, বাসটি মালিবাগ আবুল হোটেল থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে উঠে শান্তিনগর নামে। আবার আসার পথে একইভাবে ফ্লাইওভার ব্যবহার করে।

কাউন্টারম্যান লিয়াকত জানান, সকাল ৭টা  থেকে এ কাউন্টার অতিক্রম করেছে ১৫টি বাস। টিকিট বিক্রি হয়েছে ৩৫টি। এখান থেকে মতিঝিলের ভাড়া ৬০ টাকা। আবার উত্তরা থেকে মতিঝিলের ভাড়াও ৬০ টাকা। আবার উত্তরা থেকে বসুন্ধরা গেটে এসে নামলেও ৬০ টাকাই দিতে হবে। এভাবেই চলছে খেয়ালখুশির ভাড়া আদায়।  

এটি এ রুটের প্রথম এসি বাস হলেও রাজধানীতে মতিঝিল থেকে ফার্মগেট হয়ে আব্দুল্লাহপুর রুটে আরও ২টি এসি বাস চলছে। বাড্ডা রুটে ২ কিলোমিটার দূরত্ব কম হওয়ার পরও ভাড়া আগের এসি বাসগুলোর চেয়ে দ্বিগুণ নিচ্ছে গ্রিন ঢাকা।

তুলে মুরাদ নামে একজন যাত্রীর অভিযোগ, ‘‘আব্দুল্লাহপুর থেকে ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল ২০ কিলোমিটারে যার ভাড়া বিআরটিসিতে ৬০ আর ওমামা বাসে ৬৫ টাকা। সেখানে আব্দুল্লাহপুর থেকে বাড্ডা হয়ে মতিঝিল প্রায় সমান দূরত্বে ১০০ টাকা ভাড়া আদায় স্রেফ ডাকাতি!’’

ফাঁকা যাচ্ছে ৬০ ও ১০০ টাকা ভাড়ার ‘গ্রিন ঢাকা’ বাস!

এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে গ্রিন ঢাকা বাসের মালিক মন্টু মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘প্রথমত এসি গাড়িতে ১৫ ভাগ ভ্যাট দিতে হচ্ছে। অথচ বিআরটিসির এসি বাসকে কোনো ভ্যাট দিতে হয় না। দ্বিতীয়ত আমরা এমনসব যাত্রী বিবেচনায় বাস নামিয়েছি যারা প্রাইভেটকার নিয়ে চলাফেরা করেন। তারা যেন প্রাইভেটকার রেখে এ বাসের যাত্রী হন, সেটা মাথায় রেখেই  বাসের আসনগুলো আরামদায়ক করে বসানো হয়েছে। ’’

বাসে উঠে দেখা গেছে, ভেতরে হাতল টানিয়ে রাখা। সিটের অতিরিক্ত যাত্রীরা হাতল ধরে দাঁড়িয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা এটি।

এ নিয়ে জানতে চাইলে মন্টু মিয়া বলেন, যেহুতে কাউন্টার থেকে যাত্রীরা উঠবেন তাই সিটের অতিরিক্ত হযে গেলেও যাত্রী নিয়ে যাবেন তারা। অতিরিক্ত যাত্রী দাঁড়িয়ে যাবেন। তবে ভাড়া সমানেই দিতে হবে। আপাতত কাগজের টিকিট ব্যবস্থায় ভাড়া নেয়া হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যে র্যাপিড পাস কার্ড ইস্যু করা হবে।

অযৌক্তিক ভাড়া আদায়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে বিআরটিএ চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘সড়কে বড় বাস নামাতে সরকার উৎসাহ দিয়ে থাকে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে, অতিরিক্ত ভাড়া নেবে মালিকরা। ’’

তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি সংশ্লিষ্টদের বলেছেন। প্রয়োজনে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত টিম অভিযান চালাবে বলেও জানান চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৮
এসএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।