ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কেশবপুর ইউএনওকে অপসারণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
কেশবপুর ইউএনওকে অপসারণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধারা/ ছবি: বাংলানিউজ

যশোর: যশোরের কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানূর রহমানের বিরুদ্ধে ‘অসৌজন্যমূলক’ আচরণের অভিযোগ তুলে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ। একইসঙ্গে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে তাকে অপসারণেরও আল্টিমেটাম বেঁধে দেন তারা

বুধবার (২১ মার্চ) দুপুরে কেশবপুর প্রেসক্লাবে ‘লাল মুক্তিবার্তা’ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান বর্জনের ওই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বলেন, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে আসনবিন্যাসের ব্যাপারে 
ইউএনও মিজানূর আমাদের দাবি পূরণ না করায় আমরা ওই অনুষ্ঠান বর্জন করি।

এদিন উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আমাদের সম্মাননা দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে মঞ্চ তৈরি করেন। কিন্তু ১৫ ডিসেম্বর রাতে বিশেষ মহলের ইন্ধনে দুষ্কৃতকারীরা মঞ্চটি ভাঙচুর করে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এর কয়েক দিন পর ইউএনও মিজানূর বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা সামছুর রহমান, আব্দুস সাত্তার দফাদার, শাহাবুদ্দিন সরদারসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তার কার্যালয় থেকে বের করে দেন।  

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সুবোধ মিত্র, যুদ্ধকালীন কমান্ডার কাজী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল হালীম, বাম সংগঠনের নেতাসহ অসংখ্য অসাম্প্রদায়িক মানুষের চেষ্টায় ও তাদের অর্থে ৬০ দশকের শেষের দিকে কেশবপুর পাবলিক ময়দানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বর্তমান ইউওনও মিজানূর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত অক্ষত ওই শহীদ মিনারটি ভেঙে একই স্থানে নতুন করে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করে তার ভিত্ত প্রস্তর স্থাপন করে ২১ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধকের নামফলক স্থাপন করে পূর্বের শহীদ মিনারকে অস্বীকার করা হয়েছে। যা কেশবপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের শামিল এবং সরকারি অর্থের অপচয় মাত্র।  

এছাড়াও ইউএনও মিজানূর কেশবপুরের কর্মজীবী, পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবীসহ সবস্তরের মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এসব কারণে ‘লাল মুক্তিবার্তা’ভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারা আগামী ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠান বর্জনের ডাক দিয়ে ৩০ মার্চের মধ্যে ইউএনও মিজানূরকে অপসারণের দাবি করেন।  

এ সময়ের মধ্যে তাকে অপসারণ না করা হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেন মুক্তিযোদ্ধারা।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শেখ কাইয়ুম উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম খোকন, লিয়াকত আলী, ফজলুর রহমান, আব্দুল ফকির, রশিদুল হক, আব্দুর রহমান, মনি মোহন ধর প্রমুখ।

আমরা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি অ্যাডভোকেট মিলন মিত্র মুক্তিযোদ্ধাদের সব আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।

এর আগে, ইউএনও মিজানূরের কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা সাংস্কৃতিক জোট মধুমেলার সব অনুষ্ঠান বর্জন করে।  

এ বিষয়ে জানতে কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানূর রহমানের মোবাইলে কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
ইউজি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।