ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

স্থায়ীভাবে সচল হবে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
স্থায়ীভাবে সচল হবে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল স্থায়ীভাবে সচল হবে মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল

বাগেরহাট: আন্তর্জাতিক নৌপথ ভুক্ত মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে নিয়মিত দ্বিমুখী নৌ চলাচল করা হলে চ্যানেলটি স্থায়ীভাবে সচল হবে বলে মতামত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্থানীয় লোকজন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নৌ-পথ। আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলার সঙ্গে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের পন্য পরিবহনের ক্ষেত্রে এ রুটটিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।

যে কারণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ রুটটিকে সচল করতে ব্যাপকভাবে খনন কাজ করছে। তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি বর্তমানে দ্বিমুখী নৌ চলাচল করার উপযোগী গভীরতা রয়েছে নৌপথটির। ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এ চ্যানেলে একমুখী নৌচলাচল শুরু হয়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)-র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে জনান, মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলে ১০০ মিটার প্রশস্ততা রয়েছে। এখানে জোয়ারের সময় নিয়মিত ২০ থেকে ২৫ ফুট এবং ভাটার সময়ে ১২ থেকে ১৪ ফুট পানি থাকে। এ গভীরতায় দিবা-নৈশ দ্বিমুখী নৌচলাচল করতে কোন বাধা নেই। তবে নৌযান চলাচলের সময় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিয়মিত নৌযান চলাচলের মনিটরিং করতে হবে। কার্যকর নৌ-ট্রাফিক সিগনাল চালু রাখতে হবে।

সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিও গ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) কনসালট্যান্ট কামাল হুসাইন বাংলানিউজকে জানান, মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলের বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে দ্বিমুখী নৌ-যান চলাচল করতে পারবে। তবে বর্তমানে খননকৃত মাটি অপসারণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়াও এ নৌপথকে স্থায়ীভাবে বাঁচিয়ে রাখতে এ পথের সঙ্গে সংযুক্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছোট বড় ৮৩ টি নদী-খালের সকল বাধ অপসারণসহ প্রয়োজনীয় খননের ব্যবস্থা করতে হবে।

মোংলা- ঘষিয়াখালী চ্যানেলের ইজারাদার শফিকুর রহমান পলাশ 
বাংলানিউজকে জানান, সরকারের কোষাগারে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে নৌপথটি ইজারা নিয়েছি। নৌপথটি দ্বিমুখি নৌযান চলাচলের উপযোগী হওয়া স্বত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে একমুখি চলাচল করছে। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ওই অর্থ আদায় করা সম্ভব হবে না। তবে তার দাবি দ্বিমুখী চলাচল চালু হলে আগামী অর্থ বছরে সরকার আরো বেশি রাজস্বে পথটি ইজারা দিতে পারবে।

নদী গবেষক মো. শাহাবুদ্দিন শিকদার বাংলানিউজকে জানান, মোংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি বর্তমানে দিবা-নৈশ দ্বিমুখী নৌ-যান চলাচল করার উপযোগী। নিয়মিত দ্বিমুখী নৌ-যান চলাচল করলে নৌ-যানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এতে চ্যানেলের স্রোত বৃদ্ধি হবে, পলি জমার পরিমাণ কমবে সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব বাড়বে।  

পলি পড়ে মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-চ্যালেনটি ২০১১ সালে বন্ধ হয়ে যায়। তিন বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৪ সালের ১ জুলাই বিআইডব্লিউটিএ পাঁচটি ড্রেজারের মাধ্যমে খনন (ক্যাপিটাল ড্রেজিং) শুরু করে। প্রায় এক বছর খনন শেষে ২০১৫ সালের ৬ মে নৌ চলাচল শুরু করে। এরপরের বছর ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সকল নৌযান চলাচলের জন্য নৌপথটির উদ্বোধন করেন। ২০১১ সালে নৌপথটি বন্ধ হওয়ার আগে নিয়মিত দ্বিমুখী নৌযান চলাচল করত চ্যানেলটিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।