ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উত্তরে দু’টি চক্কর দিয়ে ত্রিভুবনে আছড়ে পড়ে প্লেন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
উত্তরে দু’টি চক্কর দিয়ে ত্রিভুবনে আছড়ে পড়ে প্লেন রানওয়েতে প্লেন নামার জায়গাটি পরিদর্শন করছেন তদন্তকারী দল-ছবি-বাংলানিউজ

নেপাল থেকে: দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্লেন দুর্ঘটনা হয় গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে। সেদিন ইউএস-বাংলার বিএস২১১ ফ্লাইটটি উত্তর দিকে দু’টি চক্কর দিয়ে রানওয়েতে নামতে গিয়ে আছড়ে পড়ে।

তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কর্মকর্তা, প্রত্যক্ষদর্শী এবং সিসিটিভি’র তথ্য বিশ্লেষণের পর এমন তথ্যই পেয়েছে।

ত্রিভুবন এয়ারপোর্টটির রানওয়ে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর।

যেখানে উত্তর দিকের রানওয়েকে বলা হয় টুজিরো (২০) আর দক্ষিণ দিকের অংশকে বলা জিরোটু (০২)। সাধারণত জিরোটু’র দিক থেকেই ফ্লাইটগুলো অবতরণ করে। আর টুজিরো দিয়ে উড়ে যায়। তবে ব্যতিক্রম হলে দু’দিক থেকেই নামে এবং উড়ে।

প্লেনটি রানওয়ে স্পর্শ করলে চাকার প্রবল ঘর্ষণের দাগ-ছবি-বাংলানিউজগত ১২ মার্চ দুর্ঘটনার আগে এটিসি থেকে দুইবার দু’দিক থেকে ইউএস বাংলার পাইলট আবিদ সুলতানকে নামতে বলা হয়, যা ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। পাইলট পরবর্তীতে টুজিরো দিয়েই নামার অনুমতি চান। এটিসি পাইলটকে উত্তর-পূর্ব দিকে চক্কর দিতে বলে। পাইলট সেটি ঠিকমতই করেন। এরপর তিনি উত্তর পশ্চিমে এসে আরেকটি চক্কর দিয়ে নিচের দিকে নামতে থাকেন। যে সময় এটিসি টাওয়ারের খুব কাছে চলে আসে প্লেন। সেখান থেকে নিরাপদে সরে এসে রানওয়েতে আড়াআড়িভাবে অবতরণ করার চেষ্টা করেন পাইলট।

রানওয়ের বাঁ পাশ অর্থাৎ পূর্বপ্রান্ত দিয়ে প্লেন নামার দাগ-ছবি-বাংলানিউজ

প্লেনটি নামে বিমানবন্দরের ফায়ার ভেহিক্যাল বিল্ডিংয়ের ১৫০ মিটার সামনে রানওয়ের বাঁ পাশে। সেখানে স্পর্শ করেই প্লেনটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে যায় বাইরে।

তদন্ত কমিটির হাতে এমন একটি গ্রাফ চিত্রও রয়েছে। যা বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে। গ্রাফে ওপরে ডান দিকে গোল মার্ক দিয়ে দেখানো হচ্ছে রানওয়ের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি চক্কর দিয়ে প্লেনটি। আর বা দিকে গোল মার্ক দিয়ে দেখানো হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম দিকে একটি চক্কর দিয়েছে প্লেনটি। উত্তর-পশ্চিমে চক্কর দিয়েই আড়াআড়িভাবে দক্ষিণে নেমে এসে রানওয়ের স্টার চিহ্নিত অংশে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়।

গ্রাফ চিত্রত্রিভুবন বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার রাজ কুমার ছেত্রী বাংলানিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং প্লেন আছড়ে পড়ার গ্রাফ চিত্র ছাড়াও এটিসি-পাইলটের কথোপকথনও বিশ্লেষণ শুরু করেছে। আর চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পেতে কমপক্ষে দু’মাস সময় লাগবে বলেও জানান ছেত্রী।

প্লেন দুর্ঘটনাটি ত্রিভুবন বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে তৃতীয় বৃহত্তর দুর্ঘটনা। এ পর্যন্ত বিমানবন্দরের ভেতরে-বাইরে প্রায় ৭০টি দুর্ঘটনায় ৬৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে।

ফ্লাইট বিএস২১১ বিধ্বস্ত হলে চার ক্রুসহ ৬৭ যাত্রীর মধ্যে ৪৯ জন নিহত হন। এদের মধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি, একজন চীনা ও ২২ জন নেপালি নাগরিক রয়েছে। অবশিষ্ট ২২ জনও কমবেশি আহত হন।

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৮
ইইউডি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।