ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘টা-টা দিয়ে গেলো, খেলনা-মজা নিয়ে ফিরবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
‘টা-টা দিয়ে গেলো, খেলনা-মজা নিয়ে ফিরবে’ তামাররা প্রিয়ন্ময়ীর দাদি ফিরোজা বেগম

গাজীপুর: কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে ইউএস-বাংলা এয়ালাইন্সের একটি প্লেন দুর্ঘটনায় নিহত হয় গাজীপুরের এফএইচ প্রিয়ক ও তার মেয়ে তামাররা প্রিয়ন্ময়ী। সোমবার (১৯ মার্চ) রাত ৮টার দিকে বাবা-মেয়ের মরদেহ শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা এলাকায় তাদের বাড়িতে আনা হয়েছে

মঙ্গলবার (২০ মার্চ) সকালে ৯টায় শ্রীপুরের আবদার এলাকায় আব্দুল আওয়াল কলেজ মাঠে প্রথম জানাযা শেষ হয়। বেলা ১১টায় বাড়ির পাশেই তাদের দাফন করা হবে।

নিহত তামাররা প্রিয়ন্ময়ীর দাদি ফিরোজা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলছেন, ‘তামাররা যাওয়ার আগে আমাকে টা টা দিয়ে গেলো..., বলে গেলো আমার জন্য খেলনা নিয়ে আসবে, মজা নিয়ে আসবে। ওরা-ই আসলো লাশ হয়ে। ’ তার এসব স্মৃতির কথা মনে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন প্রিয়কের মা।

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নেপালে যাচ্ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা এলাকার ফটোগ্রাফার এফএইচ প্রিয়ক। কিন্তু বিধির নির্মম পরিহাস বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারাতে হয়। বাঁচতে পারেনি আদরের কন্যা তামাররা প্রিয়ন্ময়ীও। প্রাণে বেঁচে যান প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি। বেশ কয়েকদিন নেপালে এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা শেষে সোমাবার (১৯ মার্চ) বিকেলে বাড়ি ফিরেন অ্যানি। এসময় তাকে স্বামী-মেয়ের মৃত্যু খবর জানানো হলে তিনি তা বিশ্বাস করতে পারেননি।  

ওইদনি রাত ৮টায় বাড়ির উঠানে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে কফিনবন্দি স্বামী-মেয়ের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পরিবার ও এলাবাসীর কান্নার আহাজারিতে ভাড়ি হয়ে যায় নগরহাওলা এলাকা। এর আগে নগরহাওলা এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শতশত মানুষ ভিড় জমায় প্রিয়কের বাড়িতে।

নিহত এফএইচ প্রিয়কের মামাতো ভাই সানি আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা এলাকায় সোমবার রাত ৮টার দিকে প্রিয়ক ও তার মেয়ে তামাররা প্রিয়ন্ময়ীর মরদেহ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স বাড়িতে আসে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় শ্রীপুরের আবদার এলাকায় আব্দুল আওয়াল কলেজ মাঠে প্রথম জানাযা এবং বেলা ১১টায় তাদের বাড়ির পাশে জৈনাবাজার সংলগ্ন মাতাব্বর বাড়ির মাঠে দ্বিতীয় জানাযা শেষে বাড়ির সামনে তাদের দাফন করা হবে। প্রিয়কের মা ফিরোজা বেগম ও স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি ছাড়া পরিবারের আর কেউ-ই নেই।

গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১। এ ঘটনায় মারা যান এফএইচ প্রিয়ক ও তার মেয়ে তামাররা প্রিয়ন্ময়ী। আহত হয় প্রিয়কের স্ত্রী আলমুন নাহার অ্যানি, ফুপাতো ভাই মেহেদী হাসান ও মেহেদীর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা। নিহত প্রিয়ক শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা এলাকার মৃত শরাফত আলীর ছেলে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
জিপি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।