ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
কোটা সংস্কারের আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’র সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড বলেছে, সম্প্রতি সাধারণ ছাত্রছাত্রী নাম সর্বস্ব ব্যানার ব্যাবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ২০০১-০৬ জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নাম ব্যবহার করে অনুরূপভাবে শিবির কর্মীরা আন্দোলন করেছিল।

শনিবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়। ‘বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার যথাযথ বাস্তবায়ন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ মহান মুক্তিযুদ্ধ, বীর মুক্তিযোদ্ধা-তাদের পরিবার নিয়ে কটূক্তি ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে’ এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রজন্ম কমান্ডের যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুল্লাহ মিছবাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, সেলিম রেজা, শাকিল আহমেদ বিপ্লব, মাসুদা চৌধুরী ঐক্য, কামরুন্নাহার শিমু প্রমুখ।  

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে দেশের বিভিন্ন স্থানে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ২০০১-০৬ জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নাম ব্যবহার করে অনুরূপভাবে শিবির কর্মীরা আন্দোলন করেছিল। সেই সময়েও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করেছিলো। যেহেতু তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ, তাই তারা কৌশল পরিবর্তন করে নেপথ্যে থেকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ এর সাহায্যে প্রায় ৪/৫ বছর ধরে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে মগজ ধলাই করছে।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, জামায়াত-শিবির পরিচালিত কোচিং সেন্টারগুলো সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা তথ্য দিয়ে উস্কানিতে লিপ্ত রয়েছে। এদের সবার উদ্দেশ্যই এক ও অভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকারের বিরুদ্ধে ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়নের অংশ বিশেষ।  

কোটা শিথিলতার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা সরকারের জন্য আত্মঘাতী হবে বলেও মন্তব্য করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান কোটা ব্যবস্থা শিথিল করা হবে বলে জানানোয় তার পদত্যাগ দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে কোটা ব্যবস্থার যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ কিছু দাবি ও প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।  

দাবিগুলো হলো- সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি হতে সকল পর্যায়ে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসরণ করতে হবে; মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে; চাকরির ক্ষেত্রে কতজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পোষ্য আবেদন করেছেন এবং কতজন নিয়োগ পেয়েছেন তা জানাতে হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে; নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার ব্যাপারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে; বিসিএসসহ চাকরির নিয়োগের ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষা বোর্ডে আনুপাতিক হারে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিনিধি সদস্য রাখতে হবে; বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল ও কলেজগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগদানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।  

আর প্রস্তাবগুলো হলো- সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় ৪৪ শতাংশকে ‘তথাকথিত’ মেধা কোটা বলা হয় এবং বাকি ৫৬ শতাংশকে মেধাহীন বলে আখ্যায়িত করা হয়। সবাই যেহেতু মেধার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয় সেহেতু এই ‘তথাকথিত’ মেধা কোটা শব্দটি পরিহার করে সাধারণ কোটা বলতে হবে; যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পরও মুক্তিযোদ্ধা কোটার যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি, তাদের নিয়োগ দিতে হবে; বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে  মুক্তিযোদ্ধা কোটা অনুসারে বাধ্যতামূলক কোটা পূরণ করতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
এমএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।