ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুখে বিশাল টিউমার নিয়ে ভুগছে মমতাজ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
মুখে বিশাল টিউমার নিয়ে ভুগছে মমতাজ মুখে বিশাল টিউমার নিয়ে ভুগছে মমতাজ। ছবি: বাংলানিউজ

গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের সুলতানপুর বাড়াইপাড়া গ্রাম। এ গ্রামের মৃত তছলিম উদ্দিনের ছেলে দরিদ্র মমতাজ উদ্দিন। গত ছয় বছর ধরে মুখে বিশালাকৃতির এক টিউমার নিয়ে কষ্ট আর অসহ যন্ত্রণায় দিন কাটছে মমতাজের।

মমতাজকে সুস্থ করার আশায় সহায় সম্পদ যা ছিলো সবই বিক্রি করে নি:স্ব এখন দরিদ্র পরিবারটি। চিকিৎসকরা দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হলে মমতাজ সুস্থ হবে বলে জানালেও সেজন্য যে অর্থ প্রয়োজন, তা যোগাড় করতে পারছে না পরিবারটি।

ফলে ক্রমেই মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে মমতাজ। মমতাজকে সুস্থ করতে সমাজের বিত্তবান মানুষ এবং সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন মমতাজের স্বজন ও এলাকাবাসী। সাংবাদিক দেখে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন মমতাজের এলাকাবাসী।  ছবি: বাংলানিউজবৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) বিকেল তার বাড়িতে গিয়ে কথা হয় মমতাজের সাথে। মমতাজ বাংলানিউজকে বলেন,  ‘জীবিকার তাগিদে ২০১১ সালে ঢাকার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় চাকরি শুরু করেছিলেন। কিছুদিন পরে হঠাৎই মুখের বাঁ পাশে দেখা দেয় ছোট আকারের একটি টিউমার। দিন যতোই যায় ততোই টিউমারটি ফুলে বড় হতে থাকে। ’’

বাধ্য হয়ে চাকুরি ছেড়ে বাড়িতে চলে আসতে হয় তাকে। চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুরে একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারও করান। ভালোই ছিলেন এক বছর। পরে আস্তে আস্তে টিউমারটি আবার বড় হতে থাকে। সেই সাথে বাড়তে থাকে অসহ্য নরক-যন্ত্রণা। মাঝে মাঝে টিউমার থেকে রক্ত ঝরে। তখন অন্যর সাহায্যে ছাড়া চলতে পারেন না।

মমতাজ করুণ সুরে বলেন, ‘‘আমি বাঁচতে চাই। দয়া করে আপনারা আমাকে বাঁচান। কাজকর্ম করতে না পারায় আমার সংসার চলে না। সংসার না চলায় স্ত্রী চার বছরের একমাত্র মেয়েকে ফেলে চলে গেছে বাপের বাড়িতে। ‘’

দুর্বিষহ টিউমার নিয়ে ৬ বছর ধরে অসহ্য যন্ত্রণায় দিন কাটছে মমতাজের। সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকতে নিরূপায় হয়ে তাই সকলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। চার বছরের মেয়ে ও মমতাজ। মমতাজের ভাই রেজ্জাক উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার নিজের সংসারই ঠিকমতো চলে না। ওর চিকিৎসার পিছনে সহায় সম্পদ সব শেষ। বিক্রি করার মতোও কিছু আর নেই। ডাক্তার জানিয়েছে, মমতাজকে বাঁচাতে হলে দ্রুত অপারেশন করতে হবে। অপারেশন না করালে টিউমারটি ক্যান্সারে পরিণত হয়ে পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। মমতাজের অপারেশনে প্রচুর টাকার প্রয়োজন। কিন্তু সংসারের অভাবের কারণে কোনোভাবেই টাকা যোগাড় করা সম্ভব নয়। টাকার অভাবে মমতাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে পড়েছে।

মমতাজের মা জোহরা বেগম বাংলানিউজকে বলেন,  ‘মমতাজকে সুস্থ্য করতে সসম্পদ যা ছিলো তা বিক্রি করে এখন আমরা নি:স্ব। তাছাড়াও দুই বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ায় দু’বেলা খাবার জোটানোও দু:সাধ্য আমার। দেখতে দেখতে মমতাজের টিউমারটি অস্বাভাবিক বড় হয়ে গেছে। এ কারণে সে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেছে না। অপারেশন ও চিকিৎসা না করলে কোনোভাবেই মমতাজকে বাঁচানো যাবে না। ‘

ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন তার অসহায় মা।

মমতাজের টিউমারের বিষয়ে কথা হয় পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার সজীব কুমারের সাথে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘ ‘মমতাজের টিউমারটি ক্যান্সারে পরিণত হয়েছে কিনা তা নির্ণয়ে করতে প্রয়োজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা। অতি তাড়াতাড়ি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে মমতাজকে সুস্থ করা সম্ভব। ‘

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।