ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কোটার শূন্যপদ প্রথমবার মেধা তালিকা থেকে পূরণ

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
কোটার শূন্যপদ প্রথমবার মেধা তালিকা থেকে পূরণ পিএসসি ভবন

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রথমবার কোটার শূন্যপদ মেধা তালিকায় শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করে ৩৬তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ দিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

পিএসসি বলছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কোটার ক্ষেত্রে পদ শূন্য না রেখে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের দিয়ে পূরণ করা হয়েছে; যা অন্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনুসরণ হবে।

৩৬তম বিসিএসের ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত না হওয়া প্রার্থীদের মধ্য থেকে নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে মেধাক্রম ও কোটা পদ্ধতির ভিত্তিতে শূন্যপদে ২৮৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি।



পিএসসির এ সুপারিশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপারিশ প্রণয়নের ক্ষেত্রে পিএসসির কোটা পদ্ধতি এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত ৬ মার্চের পরিপত্রের সিদ্ধান্ত অনুসরণ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে গত ৬ মার্চের ওই নির্দেশনায় সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সে সব পদ মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নির্দেশনা ছিল।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছিল, সব সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটার কোনো পদ যোগ্য প্রার্থীর অভাবে পূরণ করা সম্ভব না হলে সে সব পদ মেধা তালিকার শীর্ষে অবস্থানকারী প্রার্থীদের মধ্য হইতে পূরণ করিতে হইবে।

সরকারের এ নির্দেশনা পালন করে ৩৬তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আ  ই ম নেছার উদ্দিন।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, শূন্য পদ পূরণে পিএসসির বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি এবং জনপ্রশাসনের গত ৬ মার্চের নির্দেশনা পুরোপুরি পালন করা হয়েছে। তবে কতসংখ্যক প্রার্থী কোটার শূন্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন তা তাৎক্ষণিক জানাননি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

আর ৪৫০টি শূন্য পদের বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী স্বল্পতার কারণে কেবল ২৮৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান নেছার উদ্দিন। তিনি বলেন, অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, কোনো সমালোচনার সুযোগ নেই।

পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, মেধাক্রম ও কোটা পদ্ধতির ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণির শূন্যপদে ২৮৪ জনকে সুপারিশ করা হয়েছে।

১৯৭২ সাল থেকে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। ওই বছরের ৫ নভেম্বর এক নির্বাহী আদেশে সরকারি, আধা-সরকারি, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠানে জেলা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের জন্য কোটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে এই কোটা পদ্ধতির সংস্কার, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করেছে সরকার।

বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি ৩০ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, পশ্চাদপদ জেলাগুলোর জন্য কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ কোটা পদ্ধতি সংরক্ষিত চালু আছে। সব মিলিয়ে শতকরা ৫৬ ভাগ কোটা পদ্ধতি রয়েছে।

সরকারি চাকরিতে আবেদন করেও কোটা ব্যবস্থার কারণে প্রার্থী না পাওয়া সে সব পদ শূন্য থাকায় মেধাবীরা বঞ্চিত হচ্ছে দাবি করে কোটা পদ্ধতি সংষ্কারের আন্দোলন করে আসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে কোটার শূন্য পদে সাময়িকভাবে মেধাবীদের নিয়োগের নির্দেশনা ছিল।

তবে কোটা পদ্ধতি সংষ্কারে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার শাহবাগে আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা।

**৩৬তম বিসিএস: ১ম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে ২৮৪ জনকে সুপারিশ
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৮
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।