ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নিশ্চয়তা দিলেও পিছু হটছে না বিসিসি’র আন্দোলনকারীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮
নিশ্চয়তা দিলেও পিছু হটছে না বিসিসি’র আন্দোলনকারীরা সংবাদ সম্মেলনে বিসিসি'র মেয়র আহসান হাবিব কামাল/ ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মেয়র পর্যায়ক্রমে বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পরিশোধের নিশ্চয়তা দিলেও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নগরের বরিশাল ক্লাবের নিচতলার হলরুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন মেয়র আহসান হাবিব কামাল।  

মেয়র আহসান হাবিব বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে বিগত ২২/২৩ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করে আসছে বিসিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আর এ সময়কালের মধ্যে ৮/১০ বার সমঝোতা বৈঠক করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১১ মার্চ বরিশাল নগর ভবনের কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত সমঝোতা বৈঠকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নেতারা ও মেয়র প্রতিনিধিরা (কাউন্সিলর) উপস্থিত ছিলেন। যেখানে আন্দোলনকারীদের দাবি মোতাবেক ১৩ কোটি ৩ লাখ টাকার মধ্যে ৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকার বকেয়া বেতন এপ্রিল মাসের মধ্যে পরিশোধ করার আশ্বাস দেই। সেই প্রস্তাবে আন্দোলনকারীরা মেয়র প্রতিনিধি কাউন্সিলরদের কাছে রাজী হন। সমঝোতা বৈঠকের কাগজে আন্দোলনকারীরা স্বাক্ষর করায় আমিও (মেয়র) সেখানে স্বাক্ষর দেই।

তিনি বলেন, কিন্তু আন্দোলনকারীরা সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অজ্ঞাত কারণে অমান্য করে নতুনভাবে আন্দোলনের ঘোষণা দেয় এবং অসত্য বক্তব্য তুলে ধরে ১২ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে।  যে সংবাদ সম্মেলনে নগর ভবনের মূল ফটক তালাবদ্ধ করে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা ও নগরবাসীকে দেওয়া জরুরি সেবা বন্ধের হুমকি দেয়।  

মেয়র বলেন, পূর্বের মেয়র ৩ মাসের বেতন ও ৩৬ টি প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া রেখে বিদায় নেয়। আর আমি মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমার দায়িত্বপালনকালে ৫৩ মাসের মধ্যে ৫০ মাসের বেতন ও পূর্বের মেয়রের ১৮ টি বকেয়া প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিশোধ করেছি। সে হিসাবে আমার সময়ে ২ মাসের বকেয়া জমেছে। তবে তা দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল আন্দোলনের আগেই। আবার আমার সময়ে পূর্বের বর্ধিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী আড়াইগুণ বেশি বেতন দিতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে সিটি এলাকায় যে সব দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হাতে নেওয়া হয়েছে তা দেখে কুচক্রী মহল আন্দোলনকারীদের উসকানি দিচ্ছে বলেই ভুক্তভোগীরা মনে করেন। আন্দোলনকারী কর্মচারীদের প্রতি আমার (মেয়র) আহবান সমঝোতা বৈঠকের তাদের এবং আমার স্বাক্ষরিত সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে কাজে যোগদান করবেন এবং সাধারণ কর্মচারীদের অফিসে যোগদানের সুযোগ দিয়ে নগরবাসীদের সেবাদান অব্যাহত (মেয়র) রাখবেন বলেও আহবান জানান।

এদিকে, আন্দোলনকারীদের নেতা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা বাংলানিউজকে বলেন, বেতনের কার্যক্রম পরিচালনা করতে যে সময়ের প্রয়োজন হবে তা সংশ্লিষ্ট শাখাকে দেওয়া হবে। তবে ২ মাসের বেতন ও ৩টি প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা ব্যাংকে না ঢুকলে আন্দোলনকারীরা কর্মে যোগ দিবে না এবং সব বকেয়া পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত স্থায়ীভাবে হিসাব শাখার খোলা হবে না।

বরিশাল ক্লাবের নিচতলার হলরুমে মেয়রের সংবাদ সম্মেলনের খবর পেয়ে সেখানে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে তারা বরিশাল ক্লাবের হলরুমের বিক্ষোভ ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মেয়র ও কাউন্সিলর এবং সুশীল সমাজের নাগরিকদের বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে ক্লাব কম্পাউন্ড ত্যাগ করেন। ওই সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় এক পত্রিকার সংবাদ কর্মীকে লাঞ্ছিত করেন এক আন্দোলনকারী। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ জানায়। পরে সিনিয়র সাংবাদিক ও আন্দোলনকারী নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৮
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।