ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এমন পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
এমন পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না অনুষ্ঠানে অতিথিরা

ঢাকা: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন, বর্তমানে দেশে ভোটের যে পরিবেশ রয়েছে, তাতে ভালো কিছু আশা করা যায় না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়া ও সেনাবাহিনী মোতায়েন নিশ্চিত করা দরকার। কিন্তু সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে দুইটি বিষয়ের একটিও মেনে নিচ্ছে না।

তিনি বলেন, একটি দল দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্য বৃহৎ রাজনৈতিক দলটি আদালতে আদালতে ঘুরছে।

এতে করে ভোটের মাঠে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি হচ্ছে না।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকা ফোরামের আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও বাংলাদেশে গণতন্ত্র’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে হাফিজ উদ্দিন এসব কথা বলেন।

হাফিজ উদ্দিন আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন বলছে, সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির সময় তাদের এখনও আসেনি। কিন্তু তারা সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে কোনো সুপারিশও করছে না। ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে তারা নির্বিকার রয়েছে। এমন নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারছি না।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পক্ষ বা বিপক্ষ শক্তি বলে নাগরিকদের বিভক্ত করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সারা বিশ্ব সোচ্চার হলেও আমরা নিরব হয়ে গেছি। ভারতীয় সেনাপ্রধান অযাচিত বক্তব্য দিলে খোদ ভারতে এর প্রতিবাদ হলেও আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। আমরা কি ভারতের অংশ হয়ে যাচ্ছি? প্রশ্ন রাখেন তিনি।

অনুষ্ঠানে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার বলছে, সংবিধানে হাত দেওয়া যাবে না। সংবিধানের কাজ হচ্ছে নাগরিকদের সুরক্ষা করা। যে কোনো প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো দল বা গোষ্ঠীর জন্য সংবিধান হতে পারে না।

সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংশ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি দেশের মানুষের প্রত্যাশা নেই। প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, খালেদা জিয়া জেলে। আমাদের ঘরের মধ্যে সভা সমাবেশ করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা কি? একদল রাষ্ট্রীয় খরচে প্রচারণা চালাচ্ছে, অন্যদল ঘর থেকে বের হতে পারছে না। নির্বাচন কমিশন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বললেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলই নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। ২০০১ সালে তৎকালীন সরকার একজন বিচারকের জন্য অবসরের বয় ৬৭ করা হয়। যার ফল হিসেবে আসে ১/১১। এরপর বিচারপতি খায়রুল হকের দেওয়া রায়ের সাজা জনগণ পাচ্ছে। এর শেষ হতে কতদিন লাগবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

আবুল হাসান চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্র সমান্তরাল হলে সেই দেশ উন্নতির চরম শিখরে উঠতে পারে। গণতন্ত্র না থাকলে শুধুমাত্র উন্নয়ন নাগরিকদের কাজে আসে না।

ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে উন্নয়ন ধরে রাখতে পারব না। আসল উন্নয়ন হল মানবিক উন্নয়ন। দেশের ৮০ শতাংশ তরুণ আজ মাদকাসক্ত। বেশিরভাগ তরুণ দেশে ভবিষ্যৎ দেখতে পায়না। তারা বিদেশে চলে যেতে চায়।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, সভ্য রাষ্ট্রে এ ধরনের সভা সেমিনারের প্রয়োজন নেই। আজকে মানুষের মনে প্রশ্ন, আগামী নির্বাচন কি হবে? হলেও কেমন নির্বাচন হবে?

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সিইও) সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত এফএ শামীম আহমেদ, আহমেদ মাহমুদুর রেজা চৌধুরী, ইফতেখারুল করিম, মাসুদ আজিজ, শাহেদ আখতার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।