ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমাদের অধীনে, আমার অধীন নয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮
আমাদের অধীনে, আমার অধীন নয় ফুটপাত, রাস্তা ও পার্শ্বরাস্তা দখল করে বসেছে দোকানপাট, বাজার/ ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: সড়কটির ছয় ভাগের পাঁচ ভাগই দখলদারদের ভোগে চলে গেছে। সংকুচিত সড়কে যানজট ও দুর্ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খোদ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর (১৫ নং ওয়ার্ড) সালেক মোল্লা।

সম্ভবত কচুক্ষেত-ভাষানটেক সড়কের মতো দেশে আর কোনো সড়কের এমন করুণ পরিণতি হয়নি বলেও যোগ করেন এই জনপ্রতিনিধি।

তিনি জানান, কয়েক বছর ধরেই চলছে এই অবস্থা।

দিন দিন বাড়ছে দখলদার, ছোট হয়ে আসছে সড়ক। মুখে বলে কাজ না হওয়ায় চার দফায় চিঠি দিয়েছেন সিটি করপোরেশনে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। আবেদনের কপিও দেখান কাউন্সিলর সালেক মোল্লা।
ফুটপাত, রাস্তা ও পার্শ্বরাস্তা দখল করে বসেছে দোকানপাট, বাজার/ ছবি: জিএম মুজিবুরকাউন্সিলর বলেন, উচ্ছেদের কাজটি করে সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ। বিভাগের কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। একবার অভিযানের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছিলো। কিন্তু রহস্যজনক কারণে থেমে গেছে সেই অভিযান।

সালেক মোল্লা বলেন, উচ্ছেদের জন্য ২০১৬ সালের ২৫ জুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সম্পত্তি বিভাগ থেকে চিঠিতে আমাকে লোকজন নিয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম কেউ আসেনি। সন্ধ্যায় ফোন দিয়েছিলাম, তখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেছিলেন, পুলিশ না পাওয়ায় অভিযান চালানো যাচ্ছে না। খুব শিগগিরই নতুন তারিখ জানানো হবে।
অবৈধ দখলে পুরো কচুক্ষেত-ভাষানটেক সড়ক/ ছবি: জিএম মুজিবুরএরপর একাধিক দফায় চিঠি দিয়েছি রাস্তাটির অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য। কিন্তু সম্পত্তি বিভাগের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ১২০ ফুট সড়কের ডিভাইডারের দুই দিকে সর্বোচ্চ ১০ ফুট করে চলাচলের যোগ্য রয়েছে। যে কারণে সব সময় যানজট লেগেই থাকে, যোগ করেন ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।

সম্পত্তি বিভাগ তো আপনার অধীনে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেনো? জবাবে তিনি বলেন, সম্পত্তি বিভাগ আমাদের আন্ডারে (অধীনে) তবে আমার আন্ডারে নয়। আমি অনেকবার সভাতেও তুলেছি সড়কটি উদ্ধারের জন্য, হবে বলে কথাও দিয়েছে। কিন্তু আদৌ উদ্ধার করা যায়নি।
কচুক্ষেত-ভাষানটেক সড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাট/ ছবি: জিএম মুজিবুর১ দশমিক ৬ কিলোমিটার সড়কটির দুই দিকে গড়ে উঠেছে বিশাল বাণিজ্য। ফুটপাতের কোনো অস্তিত্ব নেই। কাঠ, কাঠের তৈরি ফার্নিচার, স্টিল, স্টিলের তৈরি আসবাব, ওয়ার্কশপ, ইট-পাথরের ব্যবসা, বাঁশ, কাঁচাবাজার থেকে মাছের বাজার কী নেই সেখানে। রয়েছে পাইকারি বিক্রির অনেক দোকান। দৈনিক শত কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে রাস্তা দখল করে।

কথিত রয়েছে ওই ব্যবসার মুনাফার একটি অংশ চলে যাচ্ছে প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে। আর তাদের তদবিরেই বারবার ব্যর্থ হচ্ছে খোদ কাউন্সিলরের প্রচেষ্টাও। যে কারণে দুর্ভোগ নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে এ এলাকার বাসিন্দাদের।
ডিএনসিসি’র ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সালেক মোল্লা/ ছবি: জিএম মুজিবুররাস্তাটির দুই পাশে রয়েছে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি), জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল ও হাসপাতাল, জাতীয় জরিপ অধিদফতর, ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট একাডেমিসহ বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান। ফুটপাত ও রাস্তা দখল হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের গাড়ি চলাচল বা হেঁটেও অফিসে যাতায়াতে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়।

এ ব্যাপারে জানতে প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮
এসআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।