ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জিবিএক্সের কাণ্ডে নিরাপত্তা হুমকি দেখছে বন্দর  

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
জিবিএক্সের কাণ্ডে নিরাপত্তা হুমকি দেখছে বন্দর  

ঢাকা: চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত এমভি ওইএল লংকা জাহাজ থেকে এজেন্টের পাঠানো পাঁচ বোতল মদ উদ্ধারের ঘটনাকে নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি ওইএল লংকা থেকে পাঠানো পাঁচ বোতল মদ পাঠায় স্থানীয় এজেন্ট জিবিএক্স লজিস্টিকস। আইএমও নির্দেশনা না মেনে জাহাজে বোট পাঠিয়ে মদ নামানোর সময় বন্দরের ওয়াচম্যান মদগুলো উদ্ধার করে।

 
 
এ ঘটনায় বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থের বিষয়টি জানিয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়েছেন বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) লে. কর্নেল আবদুল গাফফার। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী।
 
তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনায় চোরাচালানের আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরের পক্ষ থেকে দেওয়া চিঠি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সংগঠনের সব সদস্যকে পাঠানো হবে।  
 
জানা যায়, গত ৯ ফেব্রুয়ারি এমভি ওইএল জাহাজে লোকাল শিপিং এজেন্ট জিবিএক্স লজিস্টিকস প্রয়োজনীয় নথিপত্র জাহাজের মাস্টারকে সরবরাহ করতে একটি বোট পাঠান। ওই বোটের মাঝির সঙ্গে থাকা নথিপত্রের ব্যাগ নিয়ে জাহাজ থেকে নামার সময় কর্তব্যরত চিফ ওয়াচম্যান ব্যাগ তল্লাশি করে পাঁচ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেন।
 
বোট মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি লোকাল এজেন্ট জিবিএক্স লজিস্টিকস জাহাজের মাস্টারের কাছ থেকে ওই মদ সরকারি একটি সংস্থার কর্মকর্তাকে উপঢৌকনের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানান। তখন ওই বোটে সংশ্লিষ্ট এজেন্টের অনুমোদিত প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।  
 
চিঠিতে বন্দরেরর নিরাপত্তা পরিচালক উল্লেখ করেছেন, ঘটনাটি শিপিং এজেন্ট জিবিএক্স লজিস্টিকস সাধারণ বিষয় বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থে চবক গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।  
 
নিজস্ব জাহাজ ও কার্গো দিয়ে সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহনকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ‘হ্যাপাগ-লয়েড’র এ দেশীয় এজেন্ট ও মালামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আদালতে করফাঁকি ও অর্থপাচার সংক্রান্ত রিট রয়েছে বলেও জানা যায়।

নিরাপত্তা পরিচালক বলেন, মদ সরবরাহের বিষয়টি বেশ কিছু কারণে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে চবক। এজেন্টের প্রতিনিধি ছাড়া ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের সোলাস (সেফটি অব লাইফ অ্যাট সি) নীতিমালা অনুযায়ী নির্মিত জাহাজে বোট পাঠানো নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি করে।  
 
বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে জাহাজ ডুবি, পাচার, সন্ত্রাস ও ডাকাতির ঘটনায় সোলাস নীতিমালা জারি করে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও)।  এতে সোলাস অনুযায়ী অননুমোদিত দ্রব্য, মাদক, বিপদজনক বস্তু, অবৈধ পন্থায় বা চোরাচালানের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করলে নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই জাহাজ থেকে কোনো দ্রব্য বা পণ্য নামাতে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পরিদর্শন করতে হয়। এছাড়া জাহাজে কি পরিমাণ পণ্য ছিল তার মিলিয়ে দেখেন।
 
 নিয়ম অনুযায়ী সোলাস জাহাজে দাপ্তরিক বা প্রশাসনিক কাজে পাঠানো সব শিপিং এজেন্টের ভেসেল বা বোট রেজিস্ট্রি, প্রয়োজনে ভেসেল/বোটে নির্দিষ্ট রং বা চিহ্ন ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।  এছাড়া শিপিং এজেন্টের অনুমোদিত ও উপযুক্ত ব্যক্তি ছাড়া সোলাস শিপে কাউকে না পাঠানো এবং সোলাস শিপে যাওয়ার আগে ও কর্তব্য শেষে প্রত্যাবর্তনের পর রেডিও কন্ট্রোলকে অবহিত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।  
 
 বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
এমইউ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।