ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জ্বলবে ৫০০১ মোমবাতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জ্বলবে ৫০০১ মোমবাতি প্রস্তুত যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-ছবি-বাংলানিউজ

যশোর: যশোরবাসীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাণের দাবি পূরণ করেছে যশোর পৌরসভা। এবছরই প্রথমবারের মতো নতুন শহীদ মিনারের বেদীতে একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাবে জেলা শহরের আপামর জনগণ। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় নবনির্মিত শহীদ মিনারে ৫ হাজার ১টি মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের আয়োজন করা হয়েছে। 

মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের আয়োজন করেছে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠন চাঁদের হাট। এসময় যশোরের ১০১ জন বিশিষ্ট নাগরিকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টা থেকেই দেশত্বোবোধক সঙ্গীত পরিবেশন করবেন যশোরের শিল্পীরা।

মঙ্গলবার শহীদ মিনারে গিয়ে গেছে, শহীদ বেদীসহ পুরো চত্বরেই আল্পনার আঁচড়। সংশ্লিষ্টরা বাংলানিউজকে বলেন, ভাষা সৈনিক আলমগীর সিদ্দিকী, ডা. জীবন রতন ধর, আফসার আহম্মেদসহ কিছু মুক্তমনা মানুষের হাত ধরে যশোরে স্থাপিত হয়েছিলো শহীদ মিনার। ১৯৫৪ সালে যশোর মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের পুরাতন ক্যাম্পাস এবং ১৯৬২ সালে একই কলেজের নতুন ভবনের সামনে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার স্থাপিত হয়। তবে যশোরবাসীর প্রাণের দাবি ছিলো স্থায়ীভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের।  

আল্পনা আঁকা হচ্ছে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে-ছবি-বাংলানিউজ সেই প্রাণের দাবি পূরণ করতে যশোর পৌরসভার মেয়র ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম চাকলাদার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যশোর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পুরাতন ভবনের পাশে পৌরসভার অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে এই শহীদ মিনার। মূল বেদীর উপর মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পাঁচটি মিনার। আর মূল বেদী থেকে ৮টি সিঁড়ির স্তর নেমেছে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। শহীদ মিনার মঞ্চের মেঝের কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। টাইলস বসানো হয়েছে পুরোটা মিনার প্রাঙ্গণ জুড়ে।  

তবে সময় স্বল্পতায় পুরো কাজ সম্পন্ন না হলেও আগামীতে শহীদ মিনার কম্পাউন্ডে ওয়াটার বেড থেকে বইবে ৫টি মনোরম ঝর্ণা। গার্ডেন বেডে রোপণ করা হবে রকমারি সব বাহারি গাছ। শহীর মিনার আঙিনার বিভিন্ন স্থাপনার গায়ে টেরাকোটা করা হবে। টেরাকোটার মাধ্যমে বাংলা বর্ণমালার পাশাপাশি লেখা হবে একুশের চেতনা নিয়ে বিভিন্ন কথামালা।  

সাতাশ শতক জমির ত্রিকোণ আঙিনার উপর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে গড়ে তোলা হবে এই শহীদ মিনার। আপাতত মূল বেদীসহ মিনার নির্মাণের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। পরিকল্পনা অনুযায়ী পুরো কাজ সম্পন্ন করার ব্যয় নির্ধারণ চলছে বলে জানিয়েছে যশোর পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ।

প্রস্তুতি চলছে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে-ছবি-বাংলানিউজ যশোর পৌরসভার সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, বিগত বছরগুলোতে ভিড়ের কারণে নানা ধরনের সমস্যা হলেও এবার নতুন শহীদ মিনারটির চারপাশ দিয়ে প্রশস্ত রাস্তাও রয়েছে। এজন্য মানুষজন খুব সহজেই একপাশের রাস্তা দিয়ে শহীদ মিনারে যেমন প্রবেশ করতে পারবেন, আবার সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন।  

তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে ফুল দেওয়ার জন্য শহীদ মিনারের চারপাশে ব্যারিকেড দিয়ে প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ তৈরি করা হয়েছে।

যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বাংলানিউজকে বলেন, এবছর একুশের প্রথম প্রহরে যশোরের নাগরিকদের জন্য শহীদ মিনার প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। ২০১৯ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির আগেই নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
ইউজি/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।